1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত এ্যঞ্জেলা বদলী : নতুন পুলিশ সুপার সারওয়ার আলম ফুলছড়িতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুইজন আটক পোশাকের রং বদলায়, কিন্তু বদলায় কি পুলিশের আচরণ? গাইবান্ধায় এনসিপির মনোনয়ন ফরম তুলেছেন যারা পলাশবাড়ী পৌর জামায়াতের নির্বাচনী মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ী উপজেলা জাতীয়তাবাদী তারেক জিয়ার প্রজন্ম দলের আহবায়ক কমিটি অনুমোদন রাজশাহীতে বিচারকপুত্র হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় মানববন্ধন গাইবান্ধায় বিএনপির প্রার্থীকে বিজয়ী করতে জাসাসের মতবিনিময় সভা আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর করতে মাঠ প্রশাসন প্রস্তুত : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি-বহির্ভূত ৫৭টি আদেশে ডিপিসি স্থবির—১২ বছরেও প্রথম পদোন্নতি পাচ্ছেন না বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষকরা।

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন: সম্ভাবনা ও সংশয়….

  • আপডেট হয়েছে : বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতির অন্যতম বিকল্প হিসেবে “পিআর” বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (Proportional Representation) আজকাল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। গণতন্ত্র বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গৃহীত শাসনব্যবস্থা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা জোরালোভাবে শুরু হয় ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর। টক শো, সেমিনার এবং রাজনৈতিক বক্তব্যে এই পদ্ধতি এখন ঘন ঘন উঠে আসছে। আমরাও সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই পদ্ধতি নিয়ে ভাবি ও আলোচনা করি।

পিআর পদ্ধতির সুবিধাসমূহ:

পিআর পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এই পদ্ধতিতে আইনসভায় সমাজের সকল শ্রেণি, গোষ্ঠী ও মতাদর্শের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘু—সবাই মত প্রকাশ ও অধিকার রক্ষায় সুযোগ পায়। কালো টাকা ও মাসল পাওয়ারের দৌরাত্ম্য কমে, নির্বাচনী ব্যয় হ্রাস পায় এবং নির্বাচনে অপরাধী-প্রবণ প্রার্থীদের প্রভাব কমে আসার সম্ভাবনা থাকে।

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ইতোমধ্যে নারী আসনের ক্ষেত্রে আংশিকভাবে পিআর পদ্ধতির প্রয়োগ হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা আমাদের নতুন কিছু ভাবতে উৎসাহ দেয়।

সমস্যা ও সংশয়:

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও জনগণ মূলত ভোট দেয় একজন লোককে—যিনি এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু পিআর পদ্ধতিতে মানুষ ভোট দেয় দলের প্রতীককে, কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে নয়। ফলে ভোটার জানেন না, তার ভোটে আসলে কে সংসদ সদস্য হবেন। রাজনৈতিক দলই পরে ঠিক করবে কে হবে প্রতিনিধি। এতে দলীয় প্রধান বা নেতৃত্বের হাতে অসীম ক্ষমতা চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা রাজনৈতিক স্বচ্ছতার পরিপন্থী।

এছাড়া জনগণের অভিযোগ রয়েছে, মনোনয়ন পেতে হলে আদর্শ ও জনপ্রিয়তার চেয়ে অর্থবিত্ত, প্রভাব ও ‘দলের কাছের লোক’ হওয়াই বেশি কার্যকর। ফলে পিআর পদ্ধতিতে প্রার্থী নির্বাচনে বিত্তশালীদের একচেটিয়া প্রভাব পড়তে পারে। এতে গণতন্ত্রের মূল রূপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন বলা হয়— “ভোট দেবে সদ্বীপে, নেতা হবে মালদ্বীপে”—অর্থাৎ এলাকার ভোটে এলাকার বাইরে কেউ নির্বাচিত হতে পারে।

আরও আশঙ্কার বিষয় হলো—দল যদি দলীয় নমিনেশন বণ্টনে স্বচ্ছতা না বজায় রাখে, তাহলে ব্ল্যাক মানি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়তে পারে। জনগণ তাদের নেতাকে নিজের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চায়, দূরের একজন ‘দলীয়’ এমপি নয়। এতে গণমানুষের সঙ্গে নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি হয়, যা গণতন্ত্রের আত্মাকে ক্ষুণ্ণ করে।

একটি বিকল্প ভাবনা:

এই প্রেক্ষাপটে কেউ কেউ মনে করেন, ১৯০৯ সালের লর্ড মর্লে-মিন্টো আইন আদলে একটি উন্নত কাঠামো হতে পারে। যেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর জন্য নির্দিষ্ট প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছিল। এতে কথিত “ভোট ব্যাংক রাজনীতি”র অবসান ঘটানো সম্ভব হতে পারে।

এছাড়া জাতীয় সংসদের পাশাপাশি ছাত্র সংসদ, সিনেট (উচ্চকক্ষ), উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ইত্যাদিতে পরীক্ষামূলকভাবে পিআর পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। এতে করে জনগণ তুলনা করার সুযোগ পাবে—কোন পদ্ধতি অধিক কার্যকর।

বর্তমানে অনেকে প্রস্তাব করছেন—জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি এবং উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির সমন্বয় ঘটালে রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা পাবে এবং পদ্ধতির সুফল-অসুবিধা পর্যালোচনা করা সম্ভব হবে।

শেষ কথা:

আমরা এমন এক সমাজে বসবাস করি যেখানে সত্য বলা অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে পড়ে, মুখ আর মুখোশ আলাদা করা কঠিন হয়ে যায়। নেতার মুখে হাসি থাকলেও মুখোশের পেছনে লোভ লুকিয়ে থাকে। আমরা দেখেছি সাংবাদিকতার কলমও কখনো কখনো নিলামে উঠে যায়, এবং গণচেতনাও ‘আয়নাবাজি’র মোড়কে ঢাকা পড়ে যায়।

ধর্ম, রাজনীতি ও মিডিয়ার অদ্ভুত এক প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বর্তমান বাস্তবতায়। এই প্রেক্ষাপটে রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী। পিআর পদ্ধতি কি সেই সংস্কারের পথ দেখাবে, না কি গণতন্ত্রকে আরও দূরে সরিয়ে নেবে—তা নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা, প্রজ্ঞা ও নৈতিকতার ওপর।

গণতন্ত্র শুধু পদ্ধতি নয়—এটি একটি সংস্কৃতি, একটি মূল্যবোধ। আমাদের উচিত, যে কোনো পদ্ধতির আগে নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও গণমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

 

লেখক ও কলামিষ্ট
মোঃ ফিরোজ কবির আকন্দ

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft