প্রতিবেদক,মোঃ ফেরদাউছ মিয়া,
পলাশবাড়ী,গাইবান্ধাঃ
পলাশবাড়ী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (LGED) অতিরিক্ত দায়িত্বে কর্মরত উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী দালাল সাংবাদিক দিয়ে মিডিয়ায় নিজের পক্ষে একতরফা, অতিরঞ্জিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
সোমবার (২৩ জুন ২০২৫) অন লাইন পোর্টাল “প্রকৌশল সংবাদ” ও “দৈনিক গণতদন্ত”পত্রিকায় “অপপ্রচারের নিশানায় পলাশবাড়ীর সৎ প্রকৌশলী” শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
এই প্রতিবেদনে তাকে সৎ, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ঘটে যাওয়া অনিয়মগুলো ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, প্রকল্প নিয়ে জবাবদিহি এড়িয়ে গিয়ে বারবার অসুস্থতার অজুহাত তুলে প্রকল্পের তদারকি এড়িয়ে যাচ্ছেন। অথচ নিজের পক্ষে গাঁটের পয়সা খরচ করে মিডিয়া রিপোর্ট করাতে তার অসুবিধা হয় না।
পলাশবাড়ী উপজেলায় চলমান GRRIP প্রকল্পের একাধিক সড়কে নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই অনিয়মে ভরা। সাইটে অনুমোদিত নকশা সংরক্ষণ নেই, সাইট অর্ডার বই রাখা হয়নি, নির্মাণ সামগ্রীতে মানের ঘাটতি সুস্পষ্ট, এবং প্রকল্প এলাকার তদারকিতে দায়িত্বরত প্রকৌশলীর উপস্থিতি প্রায় অনুপস্থিত।
কাজের সাথে জড়িত একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকৌশলী তপন কুমার প্রকল্প এলাকায় না গিয়েই দাবি করেন, “সব দেখে এসেছি, সব ঠিক আছে।” এমন ‘ভূতুড়ে পরিদর্শন’ কি প্রশাসনিক নিয়মের মধ্যে পড়ে? না কি এটি দায়িত্বে অবহেলা এবং ঘুষ বাণিজ্যের নিরাপদ কৌশল?
বিভিন্ন সময় প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইলে প্রকৌশলী তপন সাংবাদিকদের ফোন ধরেন না বা সোজাসুজি জানান তিনি অসুস্থ। অথচ, সুবিধাজনকভাবে নিজের পক্ষে ‘নাটকীয়’ ও আবেগঘন ভাষায় প্রস্তুতকৃত একটি তথাকথিত প্রতিবেদনটি আর্থিক সুবিধা দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে সাংবাদিকদের অপমান করা হয়, প্রকল্প এলাকা ‘মেলা মাঠ নয়’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে।
সচেতন মহলের জিজ্ঞসা, কেন প্রকল্প সাইটে সাইট অর্ডার বই নেই?
কেন GRRIP প্রকল্পের কোন কাজেই তার সরাসরি উপস্থিতি দেখা যায় না?
প্রকৌশলী হিসেবে নিয়মিত তদারকি না করে তিনি কি শুধু ঢাকায় রিপোর্ট পাঠিয়েই দায় সেরে ফেলছেন?
একতরফাভাবে নিজের পক্ষ নিয়ে ‘গল্পকাহিনী’ সাজিয়ে দালাল সাংবাদিক দিয়ে সংবাদ করানো কি দায়িত্বশীল আচরণ?
একজন প্রকৌশলী যদি প্রকল্প এলাকায় না গিয়ে শুধু কথার মাধ্যমে কাজের সুপারিশ করেন, তবে এর চেয়ে বড় দায়িত্বহীনতা আর কী হতে পারে? জনগণের করের টাকায় বাস্তবায়িত প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি চাওয়া কি অন্যায়?
সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে, নিজের পক্ষে দালালি রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী প্রমাণ করেছেন, তিনি জবাবদিহি নয়, বরং নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অপপ্রচারকেই বেছে নিচ্ছেন।
প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তীর মতো কর্মকর্তারা যদি প্রকল্প এলাকায় সঠিকভাবে কাজ না করে, আবার সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে ভাড়াটে রিপোর্ট করান, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় অনিয়ম রোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। এখনই সময়, তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকল্প এলাকায় বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখা এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার।