
প্রবল বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তিস্তার পানিতে জেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি লোকজনের মাঝে ত্রাণ ও পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করে। দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে এদিন দুপুরে বিপদ সীমার ১৪ সে. মি. উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
তিস্তা পাড়ের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় বন্যায় সব চেয়ে বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে। ভারত গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। তীব্র গতিতে ময়লা ও ঘোলা পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে।
পানির গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারাজের বেশির ভাগ গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, টংভাঙ্গা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, কালীগঞ্চ উপজেলার ভোটমারী, শোলমারী, জমিরবাড়ী, বইরাতী, আদিতমারী উপজেলার কুঠিপাড়া, গোবর্দ্ধধন, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছা, রাজপুর, তিস্তা, গোকুণ্ডা এলাকার চরে ১৮ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হাজার হাজার একর আমন ধানের বীজ তলাসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড দোয়ানী’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তফিজুর রহমান বলেন, ভারত থেকে পানি আসায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা প্রতি মুহূর্তে বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলা উদ্দিন খাঁন জানান, তিস্তা নদীসহ ছোট নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫০ মে. টন চাল ত্রাণ হিসাবে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম)’র সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন জানান, পানিবন্দি পারিবারগুলোর সহযোগিতার জন্য ত্রাণ মন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। প্রতিটি পানিবন্দি পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে।