LGED ধারাবাহিক প্রতিবেদন (৩)
মোঃফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ীঃ
২০২৪-২৫ অর্থবছরে পলাশবাড়ী উপজেলায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় প্রাথমিকভাবে তিন কিস্তিতে প্রায় ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ বরাদ্দ উপজেলার বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার, রাস্তা-ঘাট মেরামত ও পানি নিষ্কাশনসহ নানা খাতে ব্যয় হওয়ার কথা থাকলেও—বরাদ্দ বিভাজনের আগেই প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আগাম অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান হেলাল। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও ঠিকাদারের কাছ থেকে নগদ টাকা, চেক এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ/নগদ) মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করেছেন। এসব লেনদেনের কোনো লিখিত রশিদ বা আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র নেই, যা বিষয়টিকে আরও সন্দেহজনক করে তুলেছে।
জানা গেছে, কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রকল্প পাওয়ার বিষয়ে একাধিকবার গোপনে বৈঠক করেছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষগুলো নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিলে প্রকল্প বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে—এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রকৌশলী সাহেব।”
উল্লেখ্য, উপজেলার এডিপি প্রকল্পগুলো মূলত গ্রামীণ যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা, এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের মতো জনকল্যাণমুখী খাতে বরাদ্দ হয়। কিন্তু প্রকল্প বণ্টনের আগেই অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এই উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপসহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান হেলালের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক মোশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন, “এই ধরনের অনিয়ম প্রমাণিত হলে তা শুধু দুঃখজনকই নয়, বরং প্রশাসনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জনগণের টাকায় পরিচালিত প্রকল্পে এমন অনিয়ম বরদাস্ত করা যায় না।”
এদিকে সচেতন মহলের দাবি, প্রকল্প বণ্টন ও বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।(চলবে)