মোঃফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ীঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়ন থেকে হরিনাবাড়ী বাজার পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চার বছর পর ফের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর আইআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় এই সড়কের কাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। কিন্তু তখন কেবল ওয়াটার বাইন্ডিং ম্যাটেরিয়াল (WBM) পর্যন্ত কাজ করে ফেলে রাখা হয়।
চার বছর পর, ২০২৫ সালে হঠাৎ পুরোনো ওই সড়কে কার্পেটিংয়ের অনুমোদন দেয় এলজিইডি। তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো, কোনো প্রকার নতুন ভিত্তি বা কাঠামোগত প্রস্তুতি ছাড়াই, পুরনো WBM-এর উপর বালু ফেলে সরাসরি কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়।
সূত্র মতে, প্রকল্পটির টেন্ডার হয়েছে জেলা এলজিইডি অফিস থেকে, তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্ব পলাশবাড়ী উপজেলা এলজিইডি অফিসের। নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের একটি পূর্ণাঙ্গ সাপোর্টিং ফাইল উপজেলা কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকার কথা। কিন্তু গতকাল ওই ফাইল দেখতে চাইলে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হেলালুর রহমান এক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরও তা দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী হেলালুর রহমান জানান, “৪ বছর আগে বাজেট না থাকায় কাজটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তৎকালীন ঠিকাদারও পালিয়ে যান। এখন নতুন বরাদ্দ পাওয়ায় কাজ শুরু হয়েছে।অনিয়মের অভিযোগ উঠায় বর্তমানে কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
তবে সাংবাদিকদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাংবাদিকরা পরশুদিন স্পটে গিয়েছিলেন। এরপর অফিসে আসায় আমি চা খাওয়ার জন্য টাকা দিতে চেয়েছিলাম। কখন যে ভিডিও করেছে, তা বুঝতে পারিনি।”
উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তপন কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় নাগরিক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক মোঃ ফেরদাউছ মিয়া বলেন, “উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হেলালুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে কর্মরত থাকায় ধরাকে সরা জ্ঞান করে চলেছেন। তিনি নিয়মিত অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঠিকাদারদের নিম্নমানের কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন। এর ফলে জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপচয় হচ্ছে। অনতিবিলম্বে তাকে তদন্তের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
এ ঘটনার পর এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের প্রশ্ন—প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদৌ নিশ্চিত হচ্ছে কি না? গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অনুপস্থিত থাকা কিংবা তা গোপন রাখার মাধ্যমে কি কোনো অনিয়ম আড়াল করা হচ্ছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে জনসাধারণ।