লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত লালমনিরহাটের হাসিনুর রহমানের বাড়িতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাক্ষাৎ ও সমবেদনা জানানোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও মানবিক সংহতির এক দৃশ্য ফুটে ওঠে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নিহত হাসিনুরের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে সমবেদনা জানাতে হাসিনুরের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
শনিবার দুপুরে জেলা জামায়াতে ইসলামি আয়োজিত এক জনসভা শেষে জামায়াত আমির সমবেদনা জানাতে হাসিনুরের গ্রামের বাড়িতে যান এবং তার পরিবারকে এক লাখ টাকা নগদ সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের দাবি তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে দ্রুত তদন্ত ও জবাবদিহিতা চান।
এর আগে দুপুরে লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক জনসভায় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “ভারত আমাদের প্রতিবেশী, কিন্তু তাদের সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। বিএসএফের এই বর্বরতা মানবতাবিরোধী। তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার” ও পেশিশক্তিমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ” তৈরির দাবি জানান। সেই সাথে সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “সংস্কার ছাড়া জনগণ নির্বাচন মানবে না দেশের জনগণ। তিনি ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র” আখ্যায়িত করে আরও বলেন, সীমান্তে অমানবিক আচরণ কাম্য নয়। ভারতকে অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ এপ্রিল হাতীবান্ধা সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর পিলারে ঘাস কাটতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হাসিনুরকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে ভারতে নিয়ে মারা হয়। দুই দিন পর মরদেহ ফেরত দেওয়া হলে পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
শফিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে সংখ্যালঘু নয়, সবাই নিরাপত্তা পাবে। নারীরা স্বাধীনভাবে চলবে, কেউ তাদের দিকে তাকানোর সাহস পাবে না। দুর্নীতি দমন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষা-নিরাপত্তা সংস্কারের মাধ্যমে কোরআনের শাসন” প্রতিষ্ঠারও অঙ্গীকার করেন তিনি।
হাসিনুরের পরিবার ও গ্রামবাসী জামায়াত আমিরের এই সমবেদনাকে স্বাগত জানালেও তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চান। তারা বলেন, সীমান্তে আমাদের নিরাপত্তা নেই। এই হত্যার বিচার না হলে সীমান্তে এরকম আরও জীবন যাবে।