বার্তা প্রেরক, মোঃফেরদাউছ মিয়াঃ
পরিবেশ অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে হাইওয়ে সংলগ্ন চকসোলাগাড়ি মৌজাস্থ বকুলের ইট ভাটায় কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব গাছ। দেখার কেউ নেই.!
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, ভাটাটির শুরু লগ্ন থেকেই কয়লার বদলে পরিবেশ বান্ধব কাঠ দিয়েই এখানে পোড়ানো হচ্ছে ইট। শ্রমিকদের দেয়া তথ্য মতে, এই ভাটার প্রতি সিফটে ৭ থেকে ৮ লক্ষ কাচা ইট পোড়ানো হয়, যা পোড়াতে প্রায় প্রতিদিন ৫০০ মণ করে গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পূর্ব হতেই এই ইট ভাটাটিতে কয়লা দিয়ে ইট না পুড়ে গাছ কেটে এনে তা দিয়ে ইট পোড়ানো হয় এবং সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে ।
ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য ফেলে রাখা গাছগুলো ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক হাইওয়ে থেকে লক্ষ্য করলেই দেখা যায়। তারপরেও রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা দেখেও না দেখার ভান করে চলছে।
এই ভাটাটির পাশাপাশিই আরো তিনটি ইট ভাটা রয়েছে যার পশেই রয়েছে প্রাইমারি স্কুল ও কয়েক হেক্টর ফসলী জমি, আর এসব ফসলী জমিকে পুকুরে রুপান্তর করে কেটে আনা মাটি থেকে তৈরী হচ্ছে ইট।
ফলপ্রসূতিতে কমে যাচ্ছে ফসলী জমি, আর ইট ভাটার কালো কার্বন নি:সরিত ধোয়ার ফলে জমি হারাচ্ছে তার প্রাণশক্তি ও উর্বরতা। আর বায়ু দূষনের ফলে জন জীবনে নেমে আসছে বায়ু দূষনজনিত রোগের প্রাদূভাব।
পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী কৃষিজমির মাটি কাটা দণ্ডনিয় অপরাধ হলেও এসব ভাটার ক্ষেত্রে তা যেন প্রযোজ্য নহে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩-এর মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণে ৫–এর (১) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলার মাটি কেটে সংগ্রহ করে তা ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, যিনি এই আইনের ৫ ধারা লঙ্ঘন করবেন,তাকে কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা করা যাবে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এ বলা হয়েছে, বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। কৃষিজমিতেও ইটভাটা অবৈধ। আইনে আরো বলা হয়েছে, ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে কোনো কাঠ ব্যবহার করা যাবে না। অথচ সব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে এসব ইটভাটা।
এব্যাপারে সচেতন এলকাবাসী সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।