
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভা এলাকায় ইরি-বোরো ধান হয় না ও আমন-আউশের মধ্যবর্তী সময়ে খালি পড়ে থাকা জমিতে সরিষা চাষ করে বাড়তি আয় করছেন পলাশবাড়ীর কৃষকরা। বীজ বপনের ৭০ থেকে ৮০ দিনে সরিষায় ফলন আসে। ক্ষুদ্র এ তেলজাতীয় শস্য সরিষা চাষ সহজ এবং বাজারমূল্য থাকায় পলাশবাড়ী পৌরসভা সহ উপজেলায় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
পৌরসভার আমবাড়ী, ও উদয়সাগর গ্রাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায় হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ।
কৃষকরা বলছেন, সরকারি সহযোগিতায় বীজ ও চাষের পরামর্শ পাওয়ায় বেড়েছে সরিষার আবাদ।
বছরের যে সময়টায় মাঠ খালি পড়ে থাকে, সে সময়টা সরিষা আবাদ করে লাভবানও হচ্ছেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসমে পৌর এলাকায় ৩৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে আমবাড়ী,নুরপুর ও মহেশপুর এলাকায়।
সরকারিভাবে পৌর এলাকায় ৬ একর জমিতে প্রদর্শনীর জন্য সহযোগিতা করা হয়েছে।
২৫০ জনকে প্রণোদনা ও ২০০ জনকে পূনর্বাসন হিসেবে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পলাশবাড়ীর তথ্যমতে, গত মৌসুমে ২৮৫ হেক্টর পৌরসভায় জমিতে বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, ও বিনা সরিষা -১১ চাষ করে ৪২৭ মেট্রিক টনের বেশি উৎপাদন হয়েছিলো।
এবছর ৩৮৫ হেক্টর জমিতে বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭ ও বিনা সরিষা-১১ চাষ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, প্রতি হেক্টরে সরিষা উৎপন্ন হবে জাতভেদে ১.৬ মেট্রিকটন। বাজারে প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সরিষা ভাঙলে প্রতি বিঘা তেল আসে ১৩০ থেকে ১৫০ লিটার। প্রতিকেজি সরিষার তেল বাজারে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
উপজেলার উদয়সাগর এলাকার বাসিন্দা সরিষা চাষি মোঃ শামিম আহম্মেদ জানান, তিনি শখের বসে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য এক বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করলেও বর্তমানে আবাদের সহজ লভ্যতায় ও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৯ বিঘা জমিতে সরিষার লাগিয়েছিলেন। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
এমন ভালো ফলনে ও কৃষি অফিসের সহযোগীতায় অনেক খুশি বলে জানান।
উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের সরিষা চাষি মোঃ মিন্টু মিয়া জানান, এবছর ১৫ বিঘা জমিতে তিনি সরিষা চাষ করেছেন। এবার ৩৬০ থেকে ৩৭০ কেজি সরিষা পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন জানান, সরিষা চাষ করতে প্রতি বিঘায় বীজ, সার-ওষুধ ও সেচে কৃষকের সর্বোচ্চ ব্যয় হয় ৭ হাজার টাকা। আর উৎপাদন হয় ৪০০ কেজি, যার বাজারমূল্য ২৫-২৮ হাজার টাকা। আমন ও আউশের মধ্যবর্তী সময়ে কম খরচে বাড়তি আয়ের জন্য কৃষকদের মধ্যে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, সরিষা চাষ জনপ্রিয় করতে কৃষিবিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করেছে । কৃষক খালি পড়ে থাকা অনাবাদী জমিতে সরিষা চাষ করলে লাভবান হবেন।