খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গরু ও আলু বোঝাই ট্রাকের চাপায় সড়ক দূর্ঘটনায় হেলপার সাধন কুমার দাস (৩০) নিহত ও চালক মহসিন আলী (৫০), গরুর ব্যাপারী মেরাজুল (৪৫) ও আলীমুদ্দির (৫০) গুরুতর আহত হয়েছে। দূর্ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত প্রায় দেড়টার দিকে সদরের অদূরে রংপুর-বগুড়া জাতীয় মহাসড়কের জুনদহ নামক এলাকায়। ট্রাক দু’টি হাইওয়ে থানা পুলিশ আটক করেছে।
সরেজমিন প্রত্যক্ষদর্শী ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় থেকে গরু বোঝাই মিনি ট্রাক (বগুড়া-ড-১১-০৭১৩) ২৭টি গরু নিয়ে গন্তব্যস্থান কুষ্টিয়ার আল্লার দরগাহ নামক স্থানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। একই সময় একই স্থান থেকে আলু বোঝাই অপর একটি ট্রাক (ঢাকা-মেট্রো-ট-১৪-৮৭০২) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
পথে ওই সময় উল্লেখিত স্থানে আলু বোঝাই ট্রাকটি চলন্ত অবস্থায় আকস্মিক ব্রেক করে গতিবেগ কমিয়ে বামে সাইড নেয়ার সময় পিছনেই থাকা গরু বোঝাই ট্রাকটি আলু বোঝাই ট্রাকটির পিছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে গরু বোঝাই ট্রাকটির ড্রাইভিং কেবিনের উপর বসে থাকা বগুড়া সদরের চাটমহা হরিপুর গ্রামের প্রয়াত গৌর চন্দ্র দাসের ছেলে সাধন কুমার দাস হেলপার ছিঁটকে দুই ট্রাকের চিপায় পড়ে আটকে গিয়ে দু’পা দ্বি-খণ্ডিত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বারিয়াকান্দি এলাকার রহমত আলীর ছেলে ট্রাকটির চালক মহসিন আলীর পা-ভেঙ্গে গিয়ে এবং একই এলাকার গরুর ব্যাপারী মেরাজুল ও আলীমুদ্দিন গুরুতর আহত হন। তন্মধ্যে মহসিনকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে পলাশবাড়ী এবং অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এসময় মহাসড়কের উভয়পাশে প্রায় ঘন্টাব্যাপী তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ঈদে সম্ভাব্য দীর্ঘ সময় যানজটের কবল থেকে রেহাই পেতে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এবং ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা নৈশকোচ ও অন্যান্য যানবাহন সমূহ বিকল্প পথ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট দিয়ে যাতায়াত শুরু করে।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের এস আই মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিহতের লাশ বের করতে ব্যর্থ হন। পরে গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর টিম লিডার গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ঘন্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। পরে সৃষ্ট যানজট মুক্তসহ যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য; পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউপি’র দুবলাগাড়ী গ্রামের মৃত মোহাম্মাদ আলী মিলিটারির ছেলে শামছুল হক আলু বোঝাই ট্রাকটির মালিক ও চালক। তিনি ওই সময় হঠাৎ চলন্ত ট্রাকটির গতি কমিয়ে দেন। পাশেই তার নিজ বসতবাড়ী। অন্যান্য দিনের ন্যায় ওই সময় মহাসড়ক ঘেঁষে দূর্ঘটনা প্রবন ওই স্থানে ট্রাকটি থামানোই সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে হাইওয়ে পুলিশ জানায়।