
মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশ ও তিন সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
বিএনপির বিক্ষোভ র্কমসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে।
এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের লাঠিপেটায় আহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ার শেল ও শর্টগানের গুলিও ছোড়ে।
আহতদের মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে শাওন (২০) ও জাহাঙ্গীর মাদবর (৩৫) নামের দুই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পুলিশ কনস্টেবল নাজিমকে (২৭) রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাথায় আঘাত পাওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজ-উল আবেদীনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার হয়েছে।
আহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ থানার ওসি তারিকুজ্জামান, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হোসেন, দৈনিক সমকালের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি কাজী দীপু (৫০), দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি মোহাম্মদ রুবেল (৪০) ও দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি গুলজাহার হোসেন (৫৫)।
পুলিশের ছয়টি মোটরসাইকলেসহ নয় যানবহনে ভাংচুর ও অগ্নসিংযোগ করা হয়।
বিএনপির দাবি, পুলিশ তাদের অন্তত ২০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
তবে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানিয়েছেন, এই ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান জানান, বিএনপি গোপনে মুক্তারপুরের মাল্টিপারপাস হিমাগারে বিএনপি কর্মী সমাবেশ ডাক দেয়। কিন্তু অনুমতি ছাড়া তারা এই কর্মসূচির আয়োজন করে। পরে তারা হিমাগারে না থেকে মিছিল নিয়ে মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাট চত্বরে সমবেত হতে থাকে। সেখানে তারা ট্রাক আড়াআড়ি করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে মঞ্চ তৈরি করে। এ সময় বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর আকস্মিক হামলা চালায়।
অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবং সমাবেশের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “পুলিশ মিছিলের ব্যানার নিয়ে টানাটানির কারণেই মারমারি ঘটনাটি ঘটেছে। না হলে মিছিলকারীরা মিছিল নিয়ে চলে যেত, পুলিশের মত পুলিশ থাকত। তাহলে আর এমন ঘটনা ঘটত না।”
তিনি বলেন, এই ঘটনায় বিএনপির প্রায় একশ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই বিএনপি কর্মী শাওন (২০) ও জাহাঙ্গীরের অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতদেরও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ এ পর্যন্ত তাদের ২০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই কর্মসূচিতে দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা আসেন। তারা সমাবেশ করতে না পেরে ঢাকায় ফিরে গেছেন।
সংঘর্ষে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মী মিলে শতাধিক আহত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।