২০১৮ সালে নির্বাচন। তার আগে বিপাকে নওয়াজ শরিফ। বৃহস্পতিবার জেরা করা হবে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে। জেরা করবে তাঁর দেশেরই গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই তাঁকে সমন পাঠিয়েছে পাক সুপ্রিম কোর্ট গঠিত জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম (জেআইটি)।
এই প্রথমবার পাকিস্তানে কোনও প্রধানমন্ত্রীকে গোয়েন্দা জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি অগাধ সম্পত্তির অভিযোগ উঠেছে। শুধু দেশেই নয় বিদেশেও অগাধ সম্পত্তির অভিযোগ শরিফের পরিবারের বিরুদ্ধে। লন্ডনেও রয়েছে বহু বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ২০১৫ সালে পানামা পেপার লিক হওয়ার পরেই শরিফের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
পাকিস্তানে এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপেও পড়তে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সম্পত্তি প্রশ্নে রীতিমতো বেগ দেয় নওয়াজ শরিফকে। এর পরে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত গঠন করে জেআইটি। সেই দলে রয়েছে এফআইএ, আইএসআই সহ বিভিন্ন পাক গোয়েন্দা সংস্থা। সংবাদসংস্থার খবর অনুসারে বৃহস্পতিবার যাবতীয় নথি নিয়ে গোয়েন্দা দফতরে হাজিরার নোটিশ পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কত কোটির সম্পত্তির অভিযোগ রয়েছে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে।
পানামা পেপার্স লিক হওয়ার পরে জানা যায়, পাকিস্তানের রাজনীতিকদের মধ্যে অন্যতম ধনী শরিফ। মোট ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে নওয়াজ শরিফের। এর মধ্যে ১০০ কোটির সম্পত্তির অধিকারী হন মাত্র চার বছরে।
২০১৫ সালে পাক নির্বাচন কমিশনকে দাখিল করা হিসেবে দেখা যায় নওয়াজ শরিফ ও তাঁর স্ত্রীর মিলিত সম্পত্তি ২০০ কোটি টাকার। এর মধ্যে বিদেশের কোনও সম্পত্তির হিসেব ছিল না।
২০১১ সালে সম্পত্তি ছিল ১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার। ২০১২ সালে সেটা আচমকা বেড়ে হয়ে যায় ২৬ কোটির উপরে। আর ২০১৩ সালে তিনি হয়ে ওঠেন বিলিওনিয়র। মোট সম্পত্তি তখন ১৮২ কোটি। নির্বাচন কমিশনের হিসেব মতো ২০১৫ সালে ছেলে হুসেন নওয়াজের থেকে শরিফ ২১ কোটি টাকার বেশি পেয়েছেন।
বেগম কুলসুম নওয়াজ।— ফাইল চিত্র
পাক প্রধানমন্ত্রীর অনেক দামি দামি ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে টয়াটো ল্যান্ড ক্রুজার, একাধিক মার্সিডিজ রয়েছে বলে পাক মিডিয়ায় খবর হয়। এই সব গাড়ি তিনি উপহারে পেয়েছেন বলেও জানা যায়। যে বাড়িতে তিনি থাকেন সেটা তাঁর মায়ের। তাঁর নামে বহু দেশি ও বিদেশি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। প্রচুর কৃষি জমি ছাড়াও চিনি থেকে কাপড়, কাগজ শিল্পেরও মালিক তিনি। আশ্চর্যের হলেও সত্যি যে, নওয়াজ শরিফের সংগ্রহে থাকা পশু, পাখির মূল্যই কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার।
শরিফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের নামেও রয়েছে অনেক বাংলো, বাড়ি, শপিং মল। তার মূল্য কিছু না হলেও ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায় তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে বলেও খবর। শরিফের দুই পুত্র হাসান ও হুসেন থাকেন বিদেশে। তাঁরাও বিলিওনিয়র। সূত্র- এবেলা.ইন