সরকারিভাবে সকল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীরা এখন বাড়িতে বসেই পাবেন তাদের ভাতার নির্ধারিত অর্থ। প্রথমে বয়স্ক, প্রতিবন্ধি এবং বিধবা নারী ভাতা ভোগীদের জন্য ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ব্যাংক হিসাব নম্বর খোলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গাইবান্ধা জেলায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসবে প্রায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ভাতাভোগী।
জেলা সমাজসেবা অফিস সুত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশের মতোই গাইবান্ধার ৪টি পৌরসভা এবং ৭টি উপজেলাতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন থেকে ভাতাভোগীরা সহজেই হাতের কাছেই ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী নিকটতম এজেন্টের মাধ্যমে নগদ অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন। জেলা সমাজ সেবা অফিস সুত্রে আরও জানাগেছে, ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে অনগ্রসর পিছিয়ে থাকা নাগরিকদের চিহ্নিত করে সরকারি বিশেষ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে ১০০ ভাগে উত্তীর্ণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই পরিকল্পনাকে এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভাতা প্রদানকারী ব্যাংক গুলোর উপর চাপ কমবে এবং গ্রাহক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে হয়রানীও কমে আসবে।
গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় উপকারভোগীদের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বর খোলা প্রক্রিয়া সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চুক্তি মোতাবেক মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্সী ‘নগদ’ এর কর্মীরা ভাতাভোগীদেরকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভাতাপ্রাপ্তীর কার্ড এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধমে হিসান নম্বর খোলার কাজ করছে। কোন কোন মোবাইল কোম্পানীর এজেন্টরা যেসকল ভাতাভোগীর মোবাইল সিম নেই তাদের তাৎক্ষনিক রেজিস্ট্রেশন করে স্বল্প মুল্যে মোবাইল সিমও দেয়ার ব্যবস্থাও করছে। পর্যাপ্ত বুধ না থাকায় দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে থাকার অভিযোগ রয়েছে কারো কারো। তবে এই হিসাব নম্বর খুলে আগামী দিনে ব্যাংকিং হয়রানীর অবসান হওয়ায় অনেকেই খুশীর কথা জানিয়েছেন।
মোবাইল ব্যাংকিং এর কর্মী মো. আজাদ মিয়া জানান, একদিন একই সময়ে সকলে একসাথে উপস্থিত হওয়ায় প্রায় ২ হাজার ৮শ জনের হিসাব খোলা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমরা একাধিক বুধ খুলে কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করবার চেষ্টা করছি।
জেলা শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান খাঁন জানান, গাইবান্ধা পৌরসভার মধ্যে ২ হাজার ৮শ’ জনের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের হিসান নম্বর খোলা হবে এবং যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের আইনগত অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে হিসান নম্বর খুলে সারাদেশে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার পর সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ভাতা গ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে অর্থ হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, জেলার সকল উপজেলায় ৮৪ হাজার ৬শ ৫১ জন বয়স্ক নারী পুরুষ, ৬৭ হাজার ৯শ ২০ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্থ নারী এবং ৩১ হাজার ৯শ ৭৭ জন অসচ্ছল প্রতিবন্ধি ব্যক্তিকে ভাতা প্রদানের জন্য এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা হবে।