1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
ঢাকা-৮ আসনে রিকশাচালক সুজনের প্রার্থীতা: নাগরিক অধিকারের ইতিবাচক উদাহরণ পলাশবাড়ীতে মৎস্যজীবি দলের উদ্যোগে বিএনপির নির্বাচনী আলোচনা সভা বরখাস্তের পরও চেয়ারম্যানের চেয়ারে সেই ফ্যাসিস্ট যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর ! দামোদরপুর ইউপিতে ক্ষোভ-উত্তেজনা বাড়ছে সাদুল্লাপুরের খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড জাসাস-এর কার্যালয় উদ্বোধন গাইবান্ধা-৪ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবীতে মশাল মিছিল গাইবান্ধা জেলা স্টেডিয়াম মাঠ পরিদর্শনে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা সারা দেশে ৫.৫ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প অনুভূত গাইবান্ধায় নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে জেলা ছাত্রশিবিরের সৌজন্য সাক্ষাৎ সাদুল্লাপুরে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই নারী মাদক কারবারী গ্রেফতার

গাইবান্ধায় শতশত যুবক-যুবতী’র কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও ‘এনজিও’

  • আপডেট হয়েছে : রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে
মহামারি করোনার কারণে থমকে গেছে জীবন ও জীবিকা। নতুন কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নেই গত এক বছর থেকে। নেই চাকরির পরীক্ষাও। কবে এই মহামারি শেষ হবে, কবে আবার চাকরির প্রক্রিয়া শুরু হবে, তা জানা নেই কারোই। এমন অনিশ্চিত এবং দুর্বিষহ বেকার জীবনের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে লাখ লাখ বেকার যখন হাঁসফাঁস করছে, ঠিক তখনি কাঙ্ক্ষিত সেই চাকরি নামক সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করেছে ‘বাদিয়াখালি ত্রান ও পূণর্বাসন সংস্থা’ নামক একটি এনজিও। এই এনজিও ও প্রতারক চক্রের মূল হোতা ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তি। গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের স্টেশন বাদিয়াখালি এলাকা থেকে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন এনজিওটির পরিচালক ওমর ফারুক।
গাইবান্ধার সাঘাটায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পে ভুয়া চাকুরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরির স্বপ্ন দেখা যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে ‘বাদিয়াখালী ত্রাণ ও পূর্ণবাসন সংস্থা’র নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুকসহ একটি প্রতারক চক্র। প্রতারক চক্রটি চাকুরি প্রার্থীদের বিভিন্ন পদে ভুয়া নিয়োগ পত্র দিয়ে এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা। প্রতারণার শিকার বেকার যুবক-যুবতীরা স্বপ্ন ভাঙ্গা মন নিয়ে চাকরির জন্য দেয়া টাকা উদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সমাধান পাননি। পরিশেষে সাঘাটা উপজেলার প্রতারণার শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগী টাকা উদ্ধারসহ প্রতারকদের শাস্তির দাবি জানিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, শুধু গাইবান্ধা জেলা নয় এই প্রতারক পার্শ্ববর্তী কুরিগ্রাম জেলাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় নিজের লোক দিয়ে চাকরির সাজানো নাটক করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। গ্রামের গরীব অসহায় পরিবারের চাকরি প্রত্যাশী তরুণ তরুণী, যুবক-যুবতীদের টার্গেট করে কাজ করেছে এই প্রতারক চক্রটি।
প্রতারণার শিকার ঘুড়িদহ গ্রামের দিনমজুর হায়দার আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম জানান, সাঘাটা উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজি (ইপিআই ) পদে চাকুরী করতেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আমাকে নিয়োগ পত্র দেখিয়ে বলেন, বাদিয়াখালী ত্রাণও পূর্ণবাসন সংস্থার কমিটিতে আমি ও আমার স্ত্রী স্বপনা বেগম আছি। এই সংস্থার অধিনে মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পে চাকুরী পাওয়ার সুযোগ আছে, তোমরা টাকা দিলে চাকুরী দেওয়া যাবে। তার কথা মতো আরিফুল আব্দুর রাজ্জাককে ১ লাখ টাকা দিলে রাজ্জাক ২০১৯ সালের ১১এপ্রিল তারিখে বাদিয়াখালী ত্রাণ ও পূর্ণবাস সংস্থা কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে পরিচালক ওমর ফারুক তাকে সাঘাটার জুমারবাড়ী ইউনিয়ন সুপার ভাইজার পদে নিয়োগ পত্র বুঝিয়ে দেন। চাকরি পেয়ে বেকার জীবনের অবসান হওয়ায় সে সময় আনন্দে কেঁদেছিলাম। তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা প্রতারণার শিকার হয়েছি, তাদের জীবনটা এই মহামারির কারণে আরও বেশি অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। কোন কাজ নেই, যতদিন যাচ্ছে পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে যাচ্ছি।চাকরির স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে প্রতারকরা অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় পরিবারের সদস্যদের মলিন চেহারা সেই হতাশা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
হাসিলকান্দি গ্রামের আবু হোসেন এর ছেলে মোশারফ হোসেন, ভাতিজী শোভা খাতুন ও আসাদুর রহমানসহ ৩ জনের চাকুরির জন্য ২ বছর আগে আব্দুর রাজ্জাককে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিলে তারাও সাথে সাথেই নিয়োগপত্র পেয়ে যান। এ যেন, টাকা দিয়ে পণ্য কেনার মতো একটি সামান্য ব্যাপার। সেদিন খুশিতে হয়তো তারাও কেঁদেছিল বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে। কিন্তু এর পর তাদের সাথেও আব্দুর রাজ্জাক আর দেখা করা বা চাকুরির বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করেননি। ধৃত রাজ্জাকের সাথে বারবার অফিসে গিয়ে দেখা করার চেষ্টা করে যদি কখনো দেখা পেতেন, তখন তিনি দাম্ভিকতার সাথে বলতেন, বসে থেকেও বেতন দেওয়া হবে, চিন্তার কিছু নেই !
ভীষণ হতাশা নিয়ে মোশাররফ হোসেনবলেন, তার বাবা মায়ের বয়স হয়েছে, এখন তার পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার কথা। কিন্তু এই মহামারির কারণে তিনি সেটাও করতে পারছেন না। উল্টো চাকরির জন্য ধার-দেনা করে পরিবার তাদের শেষ সম্বলটুকু আমার চাকরির পিছনে খরচ করেছেন। বর্তমানে পুরোপুরি মানবেতর জীবনযাপন করছি বলে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।
হাটবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল কদ্দুছ মোল্লার মেয়ে নাছরিন আক্তার বলেন, সাঘাটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মী পদে ১ লাখ টাকায় ছোট বোন সিনিগ্ধা আক্তারকে চাকরি নিয়ে দেই। এদিকে চাকরির বয়সও শেষ হতে চলেছে। মেয়ে হিসাবে পারিবারিকভাবে বিয়ে-শাদির চাপও আছে। সব কিছু মিলিয়ে একটা মানসিক চাপে ও হতাশায় থাকতে হচ্ছে।
একই ভাবে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়েউপজেলার ঝাড়া বর্ষা গ্রামের হাসান মিয়ার ছেলে বকুল মিয়াকে ঘুড়িদহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মী পদে, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাঘাটা গ্রামের আব্দুল মজিদ মন্ডলের স্ত্রী ফাতিমা বেগমকে সাঘাটা ইউনিয়নে মাঠ কর্মী পদে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।
শুধু তাই নয় ঝাড়াবর্ষা গ্রামের ভ্যান চালক হবিবর রহমান তার ভ্যানে গাইবান্ধা থেকে সাঘাটা হাসপাতালের ঔষধ নিয়ে আসার সুবাদে ইপিআই আব্দুর রাজ্জাকের সাথে তার পরিচয় হয়। পরে সংস্থার পরিচালক ওমর ফারুকের সাথে তিনি যোগাযোগ করে দেন। সেই সুযোগে ওমর ফারুক তাকে প্রতিজন লোকের জন্য ১০ হাজার করে টাকা বকশীস দেয়ার প্রলোভন দিলে সে ২৫ জনের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুককে এনে দেন।
পরবর্তীতে মেডিকেল টেকনোলজি (ইপিআই) আব্দুর রাজ্জাক সুকৌশলে সাঘটা হাসপাতাল হতে পাবনা আটঘড়িয়া উপজেলা হাসপাতালে বদলী নেন। বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন। শূধু রাজ্জাকই নন তার সাথে এলাকার বেশ কয়েক জন দালাল ও সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুক, সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালকের যোগসাজসে এই প্রতারক চক্র প্রায় তিন শতাধিত যুবক-যুবতীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ছুটিতে আছি। এই ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে সংশ্লিষ্ট এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
উল্লেখ্য, এই প্রতারক চক্রটি প্রথমে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভিন্ন পদ অনুযায়ী নিয়োগ প্রাপ্তদেরকে সর্বোচ্চ ৫৬ হাজার থেকে ৮ হাজার ৫’শত টাকা পর্যন্ত বেতন দেয়ার প্রলোভন দেন। কিন্তু পরে বেতন পাওয়া তো দুরের কথা নিয়োগ পত্র ও জামানতের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েই শুরু হয় অনিশ্চয়তা। আর এভাবেই শতশত বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়োগ পত্র দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বর্তমানে এনজিওটির সংশ্লিষ্ট সকলেই গা ঢাকা দিয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft