
ক্যাসিনোকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলার আসামি ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকারের পৃথক ছয়টি মামলার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
আজ সোমবার তার জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে তার জামিন আবেদন শুনানির জন্য রয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘ক্যাসিনোকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলার আসামি ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকারের ছয় মামলার ছয়টি আবেদনের উপর জামিন বিষয়ে শুনানি হবে আজ। উচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) যথাক্রমে ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ৩২ ও ৩৩ নম্বরে জামিন আবেদনগুলো রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৫ জুলাই ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত গেন্ডারিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা অর্থপাচারের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জয় গোপালকে আদালতে তোলা হয়।
সেসময় তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস।
এ আদালতের সংশ্লিষ্ট পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই সালোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ওইদিন শুনানিতে জয় গোপালের আইনজীবী জামিন চেয়ে বলেন যে, তার নাম এজাহারে নেই। তিনি ক্যাসিনোকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। শুধু ঘটনা জানতেন। ক্যাসিনোর লভ্যাংশ বা এ সংক্রান্ত কোনো টাকা তার কাছে আসত না।
এদিকে সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো বাণিজ্যে জয় গোপালের সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ জানায়, ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত দুই ভাই এনু ও রুপনের দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে জয় গোপালের নাম উঠে আসার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তখন সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জয় গোপাল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন ফুটবলার ছিলেন। অবসরে গিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও পরে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে এনু-রুপনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্তে এই দুই ভাইয়ের ৯১টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। ওই সব ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ২০৮ কোটি ৪৪ লাখ ১১ হাজার ৬৫০ টাকা আর উত্তোলন করা হয়েছে ২০৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪ টাকা।
এ ছাড়া তাদের ২০টি বাড়ি ও জমি ছাড়াও মোট ১২৮টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায় বলে সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়ে।
২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ দুই ভাই এনু ও রুপনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ক্যাসিনোব্রাদার এনু-রুপনের উত্থান মূলত ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি জয় গোপালের হাত ধরেই।