গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাসের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত আয়োজনবিহীন অনলাইন ক্লাস বন্ধ এবং মেস ভাড়া মওকুফে রাষ্ট্রীয় প্রজ্ঞাপন ও অর্থ বরাদ্দসহ বিভিন্ন দাবিতে রোববার (১৮ অক্টোবর) সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি কলি রানী, সহ-সভাপতি মৌসুমী রানী, সাংগঠনিক স¤পাদক আশরাফুল ইসলাম মিলন প্রমুখ। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পর্যাপ্ত আয়োজনবিহীন অনলাইন ক্লাস বন্ধ করতে হবে অথবা সকল শিক্ষার্থীদর ডাটা চার্জ প্রদান, নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান, ডিভাইস প্রদান সহ অন্যান্য আয়োজন নিশ্চিত করে অনলাইন ক্লাস নেয়ার দাবি জানান। সেইসাথে ছাত্রছাত্রীদের মেস ভাড়া মওকুফে রাষ্ট্রীয় প্রজ্ঞাপন ও অর্থ বরাদ্দ করারও দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, করোনা মহামারীতে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। মার্চ মাসে সংক্রমণের শুরু থেকেই চিকিৎসা ব্যবস্থার ভংগুর চিত্র ¯পষ্ট ফুটে উঠেছে। এখনও পর্যন্ত দেশের ৪৩টি জেলায় করোনা টেস্টের ল্যাব নেই, নেই অক্সিজেন, আইসোলেশন ও ভ্যান্টিলেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। উপরন্তু করোনা টেস্টের ফি বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারিভাবে টেস্ট করার অনুমতি দিয়ে লুটপাটের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে। এ পরিস্থিতিতে নিুমধ্য বিত্ত, শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ কাজ হারিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। সরকারিভাবে সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিপরীতে যতটুকু বরাদ্দ ছিল তা নিয়েও চলেছে লুটপাট। এই সংকটকালীন মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনও বিপন্ন। শিক্ষার্থীদের পরিবারের অর্থ সংকটের মধ্যেও স্কুল-কলেজের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। শুরু থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাই ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্কুল, কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন ক্লাস চালু করা হয়। আমরা জানি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। স্বাভাবিক সময়েই এ বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস নেয়ার আয়োজন নেই। ক্লাসরুম সংকট, শিক্ষক সংকটের ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শুরুর জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল তার কোন কিছুই লক্ষ্য করা যায়নি। প্রায় ২৮ লক্ষ শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসের আওতায় নিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের ডিভাইস, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ডাটা কেনার সামর্থ, বাড়ির পরিবেশ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ ও পদক্ষেপ নেয়ার দরকার ছিল তার কিছুই করা হয়নি। সেক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস চালু করতে হলে সকল শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ডিভাইস ও ডাটা কেনার জন্য আর্থিক বরাদ্দ, নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা উন্নত করা, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।