মিয়ানমার প্রথমবারের মতো রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার আলামত পাওয়ার কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন।
এর মাধ্যমে ২০১৭ সালে ঘটনার শুরু থেকে রোহিঙ্গা গণহত্যার কথা অস্বীকার করে আসলেও এই প্রথম রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপকাকারে নির্যাতনের কথা স্বীকার করলো মিয়ানমার। এতে করে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান বিচার আরও গতি পাবে।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দেশটির সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর বড় পরিসরের নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করছে তারা’।
বিবৃতিতে সরকারের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘২০১৬-১৭ সালের এ সময়টিতে নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এ তদন্তে মংডু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এ সময়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১০ লাখ মানুষ। খরব রয়টার্স, আলজাজিরা।
এর আগে মিয়ানমার সরকারের একটি তদন্ত কমিশন এক প্রতিবেদনে দেশটির কিছু সেনাসদস্যকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। যদিও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা ঠেকাতে এমন অভিযান চালিয়েছে বলে এতদিন দাবি করে আসছিল তারা।
এটা এমন এক সময় প্রকাশিত হলো, যখন গত সপ্তাহেই মিয়ানমারের দুই সেনাসদস্যকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে হাজির করা হয়। গত জুলাই মাসে এ দুই সেনা এক ভিডিওতে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় গ্রামবাসীকে হত্যার সাথে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। নির্যাতনের সেই ঘটনাকে রোহিঙ্গাদের উপর ‘গণহত্যা’ বলে জাতিসংঘ মন্তব্য করলেও, অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দেশটির সেনবাহিনী।