
মহামারি নভেল করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব কিছুতেই থামছে না। প্রতিদিনই দ্রুত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা। প্রতিদিনই বাড়ছে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা। এই অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে টেস্ট ক্রমেই কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিনে ২০ হাজার টেস্ট করার পরে তা বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এখন কমে ১০ হাজারের কোটায় নেমেছে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায়ও নতুন করে আরও ২ হাজার ৪৫৯ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। এইসময়ে মধ্যে সারা দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফলে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৫২৫ জন হয়েছে এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৬১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ ও এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত যারা কোভিড আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ২ হাজার ৬৯ জন, ৭৯ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং নারী ৫৪৯, ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আজ রবিবার (১৯ জুলাই) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত বুলেটিনে সংযুক্ত হয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা.নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১০ হাজার ৯৩৫টি। পরীক্ষা হয়েছে ১০ হাজার ৬২৫টি। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখ ২৮ হাজার ২৯৯টি নমুনা।’
কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৪৬ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ১১ হাজার ৬৪২ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ২০ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪ জন ও ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ৯০ থেকে ১০০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।’
এ পর্যন্ত বয়সভিত্তিক মৃত্যু শূণ্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, দশমিক ৬৫ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২৯ জন, ১ দশমিক ১১ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৭৯ জন, ৩ দশমিক ০২ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরে ১৮১ জন, ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরে ৩৭০ জন, ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরে ৭৭৮ জন, ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব ১ হাজার ১৬৪ জন, ৪৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘যে ৩৭ জন গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩২ জন, বাড়িতে ৫ জন’
এ পর্যন্ত বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ২৮৪, ৪৯ দশমিক ০৫ শতাংশ; চট্টগ্রামে ৬৬৬ জন, ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ; রাজশাহী ১৩৯ জন, ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ; খুলনা ১৬৩ জন, ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ; বরিশাল ৯৮, ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ; সিলেটে ১২২ জন, ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ; রংপুরে ৮৮ জন, ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মংমনসিংহ বিভাগে ৫৮ জন, ২ দশমিক ২২ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৬০৯ জন, ছাড় পেয়েছেন ৫১৬ জন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে গেছেন ৪২ হাজার ১৪৭ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৫৫৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৫৯১ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৮৬ জন। এ পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৯৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৫২৫ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ১৪৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৯ হাজার ৮৫৪ জন।