ময়ূরকে ভারতের জাতীয় পাখি হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে কারণ মনে করা হয় ”ময়ূর ধর্মপরায়ণ পাখি” এবং ময়ূর ”আজীবন কৌমার্য পালন করে” ভারতের একজন বিচারকের এই মন্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে চরম উপহাসের শিকার হতে হচ্ছে।
ভারতের একটি টিভি চ্যানেলে ঐ বিচারক মহেশ শর্মা বলেন যে “একমাত্র ময়ূরের অশ্রুজল পান করলেই ময়ূরী গর্ভবতী হয়”।
মিঃ শর্মার এই মন্তব্য করেন তার আরেকটি মন্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি আরও জোরালো করার জন্য। তিনি বলেছিলেন ভারতের জাতীয় পশু বাঘ পরিবর্তন করে গরু করা উচিত- কারণ “গরু ধর্মপ্রাণ প্রাণী।”
বিশেষজ্ঞরা তার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
মিঃ শর্মা উত্তর ভারতে জয়পুরের সাংবাদিকদের বলেন তার বিশ্বাস মানুষ ময়ূর এবং গরুকে পূজা করে এই দুই প্রাণীর “ঐশ্বরিক গুণাবলীর” জন্য।
তিনি আরও বলেন গরুকে অবিলম্বে জাতীয় পশুর মর্যাদা দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তার সঙ্গে একমত নয় মোটেই।
রোহিত প্রধান টুইটারে লিখেছেন ময়ূরপ্রেমী বিচারক যা লিখেছেন সেটাই প্রজনন প্রক্রিয়া নিয়ে ভারতীয় বাপ-মায়েরা যুগ যুগ ধরে তাদের সন্তানদের শিখিয়ে আসছেন। টুইটার বার্তায় ঠাট্টা করে লেখা হয়েছে- হাইকোর্টের একজন বিচারপতি যখন ময়ূরের কৌমার্য নিয়ে এত মজার খোরাক জোগাচ্ছেন তখন আর ”কমেডি নাইট” জাতীয় হাস্যরসাত্মক অনুষ্ঠানের কী প্রয়োজন!”বিচারকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, তার ডিগ্রি এসব যাচাই করে দেখা উচিত” এবং ”বিচার বিভাগের মান কোথায় নামছে” জাতীয় মন্তব্যও এসেছে টুইটারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন মিঃ শর্মার তত্ত্বের কোন ভিত্তিই নেই।
”ময়ূর অশ্রুপান করে গর্ভবতী হয় এমন কথা ছিল পুরাকালের একটা ভ্রান্ত ধারণা। ময়ূর আর সব পাখির মতই যৌন মিলনের মধ্যে দিয়ে সন্তানধারণ করে,” ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় লিখেছেন পাভি বিশেষজ্ঞ বিক্রম গ্রেওয়াল।
তবে গরুকে জাতীয় পশু হিসাবে মর্যাদা দেওয়ার দাবি শুধু মিঃ শর্মার একার নয়।
২০১৪ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের অনেকগুলো রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বেশ অনেকগুলো রাজ্যে গোরক্ষা দল তৈরি হয়েছে গরু রক্ষায় যারা স্বত:প্রবৃত্ত হয়ে পাহারাদারি শুরু করেছে।
তবে টিভি চ্যানেলে মিঃ শর্মা বলেছেন তার এই দাবির সঙ্গে গরু জবাই বন্ধ নিয়ে চলমান বিতর্কের কোন যোগসূত্র নেই।সূত্র- বিবিসি