
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি বণিক ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বিধি বহির্ভুতভাবে ফাজিল স্তরের বেতনভাতা উত্তোলন করে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, কামারজানি বণিক ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমেদ প্রথমে দাখিল মাদ্রাসার সুপার হিসাবে মাদ্রাসায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে মাদ্রাসাটি ফাজিল পর্যায়ের অনুমতি পায়। কিন্তু আজ অবধি মাদ্রাসাটি ফাজিল স্তরে এমপিওভূক্ত হয় নাই। বিধি মোতাবেক ফাজিল স্তরের এমপিওভূক্তি না হওয়া পর্যন্ত অধ্যক্ষ আলিম স্তরের পদমর্যাদায় ৫ম গ্রেডে বেতন ভাতা পাবেন। কিন্তু অধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমেদ তৎকালিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজসে ফাজিল স্তরের অধ্যক্ষ পদ মর্যাদায় জাতীয় বেতন স্কেলের ৪র্থ গ্রেডের বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যে এমপিও শীট ব্যাংকে প্রেরণ করা হয় তাতে অধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমেদের ইনডেক্স নং ০৮৭৮৫৬ এর বিপরীতে ৫ম গ্রেডের ৪৩ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪র্থ গ্রেডের ৫০ হাজার টাকার বেতন উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে ২০১০ সাল থেকে ওই অধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমেদ আলিম স্তরের ৫ম গ্রেডের পরিবর্তে এমপিওভূক্ত না হয়েও ফাজিল স্তরের ৪র্থ গ্রেডের বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছেন। এতে করে বিগত ১০ বছরে সরকারের প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি বছর জুন মাসের বেতনভাতা উত্তোলনের সময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী ও পরিচালনা কমিটিকে পৃথক পৃথকভাবে ৩শ’ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা ব্যাংকে জমা দিতে হয়। অঙ্গীকারনামায় বেতনভাতার অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করলে তা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু এই অধ্যক্ষ তার কোনটিই করেননি। বরং তথ্য গোপন করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অধ্যক্ষ শাহ হোসাইন আহমেদ ২০১০ সাল থেকে যে অতিরিক্ত বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন তা বিধি মোতাবেক ফেরত গ্রহনের পদক্ষেপ গ্রহন করাসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কামারজানি বণিক ফাজিল মাদরাসার অ্যাডহক কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। আপনার মাধ্যমে শুনলাম। ঘটনা সত্য হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হব’।
বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. এনায়েত হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তার নজরে এসেছে অধ্যক্ষের কাছ থেকে বিষয়টি জানা হবে। সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।