করোনাভাইরাস সংক্রমন নিয়ে বড় বিপর্যয়ে থাকা স্পেন গুরুতর অভিযোগ করেছে চীনের বিরুদ্ধে। চীন তথ্য লুকিয়ে বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে চীন বিশ্বের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের স্প্যানিশ সদস্য হারমান টার্টচ বলেন, চীনের ভুল বার্তা এবং তথ্য আড়াল করার কারণেই এই মহামারি। বিশ্বের লাখো মানুষের মৃত্যু এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্যও চীন কখনই দায়মুক্তি পেতে পারে না।
চীনের তীব্র সমালোচনা করে একটি জার্নালে লেখা নিবন্ধে সরাসরি চীনকে দায়ী করেন হারমান টার্টচ। তিনি বলেন, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব এই ভাইরাসের ব্যাপারে গত বছরের নভেম্বরেই জানতে পায়। তখন তারা নীরব থাকার নীতি নেয় এবং বিশ্বকে ভয়াবহ শাস্তি দেয়ার জন্য ভুল বার্তা দিতে থাকে। এই ভাইরাসের ভয়াবহ ক্ষতি এখনও অপেক্ষা করছে।
চীন যে বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে সেজন্য কয়েকটি যুক্তিও উপস্থাপন করেন হারমান টার্টচ। বলেন, করোনাভাইরাসের কেন্দ্র উহানে চিকিৎসকরা যখন কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন; তখনই তারা প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ব্যাপারে চীনের রাষ্ট্রীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উই চ্যাটে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু চীনের ক্ষমতাসীনরা চিকিৎসকদের কণ্ঠরোধ করে।
করোনার উপস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া চিকিৎসকরা হয় মারা গেছেন নতুবা তাদের গুম করা হয়। এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সহায়তা করার জন্য প্রতিনিধিদল পাঠাতে চাইলে চীন তা প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানায়। কিন্তু সেই সময় এই ভাইরাস চীনের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিস্তার ঘটায়।
চীনের গণমাধ্যমের সমালোচনা করে হারমান টার্চড বলেন, চীনা গণমাধ্যমগুলো করোনাভাইরাসটি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য জীবাণু মারণাস্ত্র হিসাবে ল্যাবে তৈরি করেছে বলে গল্প ছড়াতে শুরু করল। আসলে এসবের কোনও ভিত্তি নেই। এই সঙ্কটকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিয়ে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের বাগযুদ্ধে উসকানি দেয়া শুরু করল।
চীন বিশ্বের জন্য একটি হুমকি উল্লেখ করে স্পেনের এ রাজনীতিবিদ বলেন, নকল পণ্যের অন্যতম কারিগর চীন এখন পশ্চিমা বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির দিকে নজর দিয়েছে। ইউরোপীয় রক্ষণশীল এবং সংস্কারপন্থী দলগুলোর সঙ্গে চীনের ব্যাপারে আলোচনায় বসতে হবে।
স্পেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৯ জন। মারা গেছেন ১৬ হাজার ৯৭২ জন।