ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালিধরন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে গেছেন।
আজ বুধবার এ সংক্রান্ত এক ঘোষণায় তিনি বলেন, নয়াদিল্লিতে নিজ বাসভবনে তিনি ঘরবন্দি হয়ে থাকবেন।
তবে টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা ভাইরাস নেগেটিভ এসেছে। তারপরও অধিক সাবধানতার জন্য তিনি কোয়ারেন্টিনের এ পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
সম্প্রতি তিনি একটি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে যান, যেখানকার হাসপাতালে পরবর্তী সময়ে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মূলত সে কারণেই প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালিধরন স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে গেছেন।
গত ১৪ মার্চ শ্রী চিত্রা ট্রাইব্যুনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজিতে একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন মুরালিধরন। সেখানে স্পেন ফেরত এক চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানের মাত্র একদিন পর ওই চিকিৎসকের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে।
ফলে ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা প্রতিষ্ঠানটির ২৫ চিকিৎসকসহ ৭৬ কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন। একই সঙ্গে কোয়ারেন্টিনে গেলেন প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালিধরনও।
পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। এতে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৪৭ জন।
উল্লেখ্য, চীনে করোনা ভাইরাস প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। কিন্তু চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে ব্যাপক আকারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এতে বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড আতঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৮১৯ জনসহ মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৯৮০ জনের। এর মধ্যে উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৭। চীনের বাইরে মারা গেছে ৪ হাজার ৭৪৩ জন।
এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ৮২ হাজার ৭৬৩ জন সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৯৪। দেশটিতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৯ হাজার ৬১৪ জন। এছাড়া চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৫ জন মানুষ।
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ১ লাখ ৭ হাজার ৬০৬ জন আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১৯০ জনের অবস্থা সাধারণ (স্থিতিশীল অথবা উন্নতির দিকে) এবং বাকি ৬ হাজার ৪১৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুর হার ৯ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯১ শতাংশ।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়সুস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
চীনে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৫টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।