1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন
১৪ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
‎”মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে” ‎লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ উদ্বোধন করলেন হাঙ্গেরীর কনসাল পোলানেক ‎লালমনিরহাটে আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোরচক্রের ৮ সদস্য গ্রেপ্তার পলাশবাড়ীর পবনাপুর ইউপি কার্যালয়ে তালা, সেবা থেকে বঞ্চিত কয়েক হাজার মানুষ গাইবান্ধায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদযাপন সমৃদ্ধ গাইবান্ধা বিনির্মানে ব্যবসায়িক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধায় দু’দিনব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ীর পবনাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের তথ্য অধিকার দিবস পালন জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে রেমিট্যান্স : প্রধান উপদেষ্টা ‎লালমনিরহাটে বিদ্যুৎপৃষ্ঠে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু ‎

গাইবান্ধায় সাঁওতালদের “বাহা পরব” অনুষ্ঠিত

  • আপডেট হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০২০
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

 

বহু সংস্কৃতি, বহু ভাষা আর বহু জাতির সম্মিলনে বাংলাদেশ একটি জাতি-বৈচিত্র্যের দেশ। এ দেশের পাহাড় থেকে সমতলে ৪৫টি আদিবাসী জাতি বাস করে- যাদের রয়েছে স্বতন্ত্র্য ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি। সংখ্যায় প্রায় ২৫ লক্ষাধিক, যা মূল বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রায় ২ ভাগ। এদেশের বৈচিত্র্যময় আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংখ্যাগুরু বাঙালিদের পরিচয় নেই বললেই চলে। প্রধান জনগোষ্ঠীর অবহেলা এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের অভাবে আদিবাসীদের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি আজ প্রায় বিপন্ন। কিছু কিছু এর মধ্যেই হয়ে গেছে বিলুপ্ত।

এরমধ্যে উত্তরের জেলা গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল সম্প্রদায় নিজস্ব ঐতিহ্যে নেচে-গেয়ে আনন্দের সাথে বরণ করলেন ঋতুরাজ বসন্তকে।গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের মোত্তালেব নগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাহা পরব বা বসন্ত উৎসবে মেতে ওঠে আদিবাসী সাঁওতালরা। ৪ মার্চ বুধবার অবলম্বনের আয়োজনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সহযোগিতা করে। নাচে-গানে-মাদলে আদিবাসী সাঁওতালরা তাদের নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতিতে বাহা পরবের মাধ্যমে বরণ করেন ঋতুরাজ বসন্তকে। সকালে পুজা-অর্চনার পর বাহা পরবের প্রথম অংশে আলোচনা সভা ও পরে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

সাঁওতাল সাংস্কৃতিক দলের সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এতে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ৬টি ইউনিয়নের ৮টি সংস্কৃতিক দল অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন বর্ণের আদিবাসী-বাঙালিদের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হয় গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল গ্রামগুলো। বাহা পরব মানুষের সাথে প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের প্রতীক। সাঁওতালি ভাষায় বাহা মানে ফুল। বাহা পরব হল সাঁওতালদের ফুলের পার্বণ। ফাল্গুন মাস সাঁওতালদের বছরের প্রথম মাস। প্রতি বছর বসন্তের শুরুতে মানে ফাল্গুন মাসে এই পার্বণ পালন করা হয় প্রতিটি সাঁওতাল গ্রামে। এই সময় বেশীরভাগ গাছের নতুন পাতা, ফুল ইত্যাদি আসে তাই সাঁওতালিরা মনে করেন যে এই সময় গাছেরা প্রজননশীল হয়। তাই বাহা পরবের আগে তাঁরা গাছের ফুল, ডাল ইত্যাদি ভাঙ্গে না। সমস্ত গ্রামবাসী এটা পালন করে। গ্রামের এই প্রান্তে ‘জাহের থান’ নামে এক পবিত্র স্থানকে কেন্দ্র করে বাহা পরবটি পালন করা হয়।

বাহা পরব উৎযাপন কমিটি আহবায়ক এ্যামিলি হেমব্রমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন, গাইবান্ধা জেলা উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান, সাংস্কৃতিক কর্মী দেবাশিষ দাশ দেবু, রণজিৎ সরকার, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, আদিবাসী নেত্রী কেরিনা হাসদা প্রমুখ।

দীর্ঘদিন পর এ ধরনের উৎসবের সুযোগ পেয়ে সাঁওতালরা সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উৎসবের মহড়া দিতে থাকে। উৎসবের জন্য কেনা হয় নতুন কাপড়। উৎসবস্থল আদিবাসীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া সম্বলিত ফেস্টুনে সুসজ্জিত করা হয়। বাহা পরব উপলক্ষে মেলায় আদিবাসীদের বেশ স্টলে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যেও সামগ্রী প্রদর্শিত হয়।

গ্রামের নাইকে অর্থাৎ পুরোহিত মঙ্গল টুডু বলেন, বাহা পরব ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হয়ে থাকে। গ্রামের মানঝি (গ্রাম প্রধান) পরবের দিন ঠিক করে। দুই-তিন দিনব্যাপি চলতে থাকে পরব। বাহা পরবের জন্য নির্দিষ্ট একটি পূজার স্থান থাকে। একে সাঁওতালরা জাহের থান বলে। তিনটি ছোট ছোট খড়ের ঘর দিয়ে জাহের থান তৈরি হয়। গ্রামের নাইকে অর্থাৎ পুরোহিত পরিস্কার ধুতি পড়ে পূজা থানে যান। নাইকের হাতে কাঁসার থালাতে থাকে নতুন নতুন ফুল। এসময় সাঁওতাল তিন দেবতা জাহের এঁরা (ফুলের দেবী), মারাঙবুরু (সাঁওতাল দেবতা প্রধান), পারগানা বঙ্গা (এলাকার দেবতা) এর পুজা করেন নাইকে।

বাহা পুজার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে যে, আমরা যেন আজ থেকে সারাবছর ভালাভাবে চলতে পারি। আমাদের যেন কোন অমঙ্গল না হয়, কষ্ট না হয় আর এই আনন্দ যেন সারাবছর সবার সাথে একই রকম থাকে। আদিবাসী নেত্রী কেরিনা হাসদা বলেন, বাহা পরব বা উৎসব সমতলের সবচেয়ে সংখ্যাদিখ্য আদিবাসী জাতি সাঁওতালদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। বাহা মানে ফুল। ফুল উৎসব যতক্ষন না আদিবাসীরা করতে পারেন ততক্ষন পর্যন্ত আদিবাসীর সমাজে নতুন ফুল ব্যবহার করা হয় না। আর মেয়েরাও তাদের খোপায়-মাথায় এই ফুল দিতে পারবে না। এ দেশের প্রকৃতির সাথে আদিবাসী সমাজ মিশে আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যেভাবে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, যেভাবে বনজঙ্গল উজাড় হয়ে যাচ্ছে এবং আদিবাসীরা যেই জায়গা থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে। সাঁওতালসহ অন্যান্য আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী এসব সংস্কৃতি আগের সেই জৌলুস হারাতে চলেছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft