
জাল টাকা উদ্ধার, অস্ত্র ও মাদকসহ নানা অনৈতিক কাজের হোতা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মতি সুমনকে তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। রিমান্ড চলাকালে থানায় বসেই যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত এই নেত্রী ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীর প্রতারণার শিকার এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেয়ার কথা জানা গেছে।
তপন তালুকদার টুকু নামের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতারণতার মাধ্যমে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পাপিয়া।
পাপিয়া দম্পতির প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ী তপন তালুকদার টুকু বলেন, পাঁচ মাস আগে আমি ঢাকা থেকে নরসিংদী বন্ধুর বাড়ি যাই। সেখানে দেখা হয় পাপিয়ার সঙ্গে। অনুষ্ঠান শেষে পাপিয়া আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ৪জন সুন্দরী তরুণীকে আমার সামনে নিয়ে আসে। জোর করে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।
আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। নইলে এই ভিডিও সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবো। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবো। আপনার নামে মানব পাচারের মামলা দেয়া হবে। পরে মারধর শুরু করে। মান-সম্মানের ভয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ২০ হাজার টাকা দিই। তাতেও মন গলেনি।
পরে আমাকে বাড়ির ছাদে তিনদিন আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ব্যাংকের মাধ্যমে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা দেয়ার পর ছাড়া পাই।
তিনি বলেন, পাপিয়ার গ্রেফতারের খবর শুনে আমি বিমানবন্দর থানায় যাই। ওসিকে ঘটনা খুলে বলি। পরে ওসি পাপিয়াকে থানাহাজত থেকে তার রুমে ডেকে আনেন।
এ সময় পাপিয়াকে সালাম দিয়ে আমার ওপর নির্যাতনের ঘটনা বলি। তখন সে হাতজোর করে আমার কাছে ক্ষমা চায়। থানার ওসির সামনে বলেন, আমার ভুল হয়ে গেছে। একজনের নির্দেশে আমি ওটা করেছিলাম। তোমার টাকাটা ফেরত দেব। তুমি আইনের আশ্রয় নিও না। কিন্তু টাকা পাইনি।
বুধবার ফের থানায় গিয়ে ওসিকে বলি, আমার টাকা না দিলে আমি পাপিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করবো। তখন ওসি বলেন, আপনি মামলা দিলে নরসিংদীতে দিতে হবে। কারণ আপনার সঙ্গে ঘটনাটি সেখানে ঘটেছে।পরে ওসির রুমে পাপিয়ার স্বামী সুমনকে ডাকা হলে সুমন হুমকি দিয়ে বলেন, আপনার টাকা দেবো না। আমাদের নামে আপনি কী মামলা দেবেন? বড়জোর প্রতারণার মামলা দেবেন। এ মামলায় দুই মাসের বেশি জেল হবে না। অস্ত্র মামলা খেয়েছি। তাতেই ভয় পাচ্ছি না। আর প্রতারণার মামলায় কী হবে?