
করোনাভাইরাস নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ।
সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ইতিমধ্যে কয়েকজন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন- বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও কথিত নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। দৈনিক খবর, টুইটবাংলা ডটকম, অন্য আলো নামে তিনটি ফেসবুক পেজ এবং শেখ রানা ও এম এ হাসনাত জামিল নামে দুটি ফেসবুক আইডিতে এই গুজব ছড়ানো হয়। এ কারণে ফেসবুক পেজ এবং আইডি সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার আরামবাগ, মগবাজার ও রমনা থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে সব ভুয়া খবর ইতিমধ্যে তুলে নিয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আর কোনো ভুয়া তথ্য ছড়াবে না বলেও লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছেন তারা।
ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মনিটরিং টিম যখন দেখেছে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তখন আমরা কয়েকটি সোর্স বের করি। এরপর আমরা তাদের ডেকে এনে বুঝিয়েছি, কাউন্সেলিং করেছি যে, তাদের এ ধরনের আচরণে জনমনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। এর পরিণতি কতটা খারাপ হতে পারে। তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে বলেছে, ওই পোস্টগুলো তারা তুলে নেবে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করে পোস্ট দেবে।’
বিভিন্ন ফেসবুক আইডি, ফেসবুক গ্রুপ ও নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে এই গুজবগুলো ছড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নাজমুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি অনলাইনে এমনও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জে একই পরিবারের দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরে সাইবার ক্রাইম ইউনিট মুন্সীগঞ্জে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, এ ধরনের খবরের কোনো ভিত্তিই নেই।
ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণ জানতে চাইলে আটক দুজন পুলিশকে যুক্তি দেখান যে, মানুষ ভয় পেয়ে আরও সচেতন হবে, সে জন্যই তারা এসব মনগড়া খবর প্রচার করেছে, যোগ করেন তিনি।
মো. নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আসলে তাদের সাইবার ক্রাইম বা সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহারের সঠিক জ্ঞান ছিল না। এজন্য আমরা তাদের বুঝিয়েছি বা সফট পুশ করেছি। কিন্তু এরপরও যদি দেখি একই কাজ তারা করছেন, তাহলে আমরা শক্ত অবস্থানে যাব। তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হবে।’
তবে বাংলাদেশে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সরকারের পক্ষ থেকেই সেই খবর জানানো হবে। তাই তার আগে কোনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানান ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার।