
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, বিএনপির অবস্থা দেউলিয়াপনার অবস্থায় নিপতিত হয়েছে। নালিশি তাদের একমাত্র পুঁজি। বিএনপির কোনও অভিযোগ থাকলে সেই অভিযোগ বা নালিশ তারা করতে পারে জনগণের কাছে। বিচারক হতে পারে জনগণ।
তিনি বলেন, বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বিএনপি প্রমাণ করেছে দেশের জনগণ ও ভোটারদের প্রতি তাদের কোনও আস্থা নেই। জনগণের প্রতি ভরসা থাকলে তারা এত নালিশ করতো না।
আজ সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আক্রমণের ভাষা পরিহার করা উচিত। ড. কামাল হোসেনের মতো একজন বিজ্ঞ মানুষ যখন খেই হারিয়ে বলেন, “সরকারকে লাথি মেরে নামাতে হবে” তার মুখে এ ধরনের ভাষা শোভন নয়। এটি পরিহার করা উচিত। অশালীন অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করা ঠিক নয়। যৌক্তিক ভাষা আমরা যেন ব্যবহার করি। রাজনীতিতে মতান্তর থাকবে। মতান্তর যেন মনান্তর না হয়। মনান্তর পরিহার করতে পারলে রাজনীতিতে গুণগত মান বাড়বে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকবে। কিন্তু সেটি কখনও যেন আক্রমণাত্মক না হয়। রাজনীতিরও একটি ভাষা আছে। আমরা ডিভাইস হয়ে যাচ্ছি। এটি পরিহার করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমাদের আমন্ত্রণের সাড়া দিয়ে ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, এ কিউ এম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী উপস্থিত থাকলেও বিএনপির কেউ আসেনি।’
আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো যখন মারা গেলো, সন্তান হারা মাকে সান্ত্বনা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের দরজার তালা, গেটের তালা সব বন্ধ রাখা হয়েছিল। সব তালাবদ্ধ ছিল। অমঙ্গলীয় দেয়াল তুলে ফেলতে হবে। রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। সবকিছুই যেন মানি না, মানবো না সংস্কৃতির দিকে যাচ্ছে। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’
এবার প্রথমই আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে তরুণ ক্রিকেটারদের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। ভারতকে হারিয়ে যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় জুনিয়র টাইগারদের গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে। কেবিনেটে টাইগারদের গণসংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিজয় গোটা জাতির।
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই যে ক্যাপ্টেন, অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ বিজয়ের নায়ক তার বাড়ি বাংলাদেশের একদম রুরাল এরিয়ায়। সেই পিছিয়ে পড়া রংপুর জেলার কুড়িগ্রামের সন্তান। দলে কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়ের খেলোয়াড়ও আছেন। আমাদের বিকেএসপিতে তৃণমূলের যে প্রশিক্ষণটা হয় সেটা চমৎকার প্রশিক্ষণ। সেখান থেকেই নতুন নতুন ক্রিকেটার সৃষ্টি হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের আন্তরিক অভিনন্দন। তাদের দুর্দান্ত দক্ষতায় পরপর চারবার চ্যাম্পিয়ন ভারতের মতো শক্তিমালী দলকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তরুণরাই এনে দিয়েছে এ বিজয়। ঐতিহাসিক বিজয়, সেজন্য আমাদের আন্ডার নাইনটিন যে টিম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, কেবিনেট এটা দিয়ে শুরু হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বিজয়কে আমরা সেলিব্রেট করবো। এই বিজয়ী বীরদের গণসংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি তারা ফিরে এলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুবিধামতো একটা সময়ে এই বিজয় সেলিব্রেট করার জন্য সংবর্ধনা দেওয়াটা আমাদের উচিত। কারণ আমরা এখন পর্যন্ত কোনো খেলায় আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, ক্যাপ্টেন যে ম্যাচুইরিটি প্রদর্শন করেছেন, ৬ উইকেট যাওয়ার পর আমরাতো ভাবিইনি জিতবো। তিনি যেভাবে দলকে বিজয়ের স্বর্ণদুয়ারে টেনে নিয়ে গেছেন সেটা অবশ্যই স্মরণীয় ঘটনা।