
আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ভোটের গোপন কক্ষে কোনো স্থানে কারও কারও ‘উঁকি’ দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে জানিয়ে বলেন, যেখান শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, সেখানে উঁকি দেয়াটা বড় বিষয় নয়।
আজ রোববার সচিবালয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি-ডিএসসিসি) নির্বাচনের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি দেখেছি কয়েকটি সংবাদপত্রে লিখেছে যেখানে গোপনকক্ষ সেখানে উঁকি দেওয়া হয়েছে। এতো বড় একটি নির্বাচন প্রায় আড়াই হাজার ভোটকেন্দ্র, ১৩ হাজারের বেশি বুথ, সেখানে কয়েকটি গোপনকক্ষে কেউ উঁকি দিয়েছে, এটি কি বড় বিষয়? এতোবড় একটি নির্বাচনে কোনোস্থানে কোনো গণ্ডগোল, মারপিটের ঘটনা ঘটেনি, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে, কোনো কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেনি, সেটি মূল বিষয়। আমি অতীতের দিকে যদি তাকাই তাহলে উঁকি দেওয়াটা বড় বিষয় না। কিন্তু কেউ কেউ এই উঁকি দেওয়াটাকে বড় বিষয় হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। যা অনঅভিপ্রেত ও দুঃখজনক।
বিএনপির সমর্থকরা নির্বাচন কেন্দ্রে না গিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে কি আপনি মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি শুরু থেকেই বলেছে তারা নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনেতো ভোটাররা অংশগ্রহণ করতে চায়নি, সেটি একটি বড় কারণ।
আরেকটি হচ্ছে বিএনপি প্রথম থেকেই যেসব বক্তৃতা বা বিবৃতি দিয়েছে, সর্বশেষ মির্জা ফখরুল যে কথাটি বলেছেন, আমাদের সাফল্য হচ্ছে আমরা মাঠে নামতে পেরেছি। এতে ভোটাররা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। তাদের ভোটারদের কেন্দ্রে কেন্দ্রে উপস্থিত করতে যে চেষ্টা সেটি মোটেও ছিল না তাদের পক্ষ থেকে। যেটা আমাদের পক্ষ থেকে ছিল। বিএনপির এজেন্টরা কেউ কেউ কক্সবাজারে বেড়াতে গেছে। তারা সকালে ভোটকেন্দ্রে আসেনি, দুপুরে এসেছে, আবার খেতে চলে গেছে, আর আসেনি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে নিয়ম বা ঐতিহ্য হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ডেকে আনা। এমনি রিকশা করেও ভোটারদের নিয়ে আসা হয়। ভোটের ক্ষেত্রে এটি আমাদের দেশে চিরাচরিত নিয়ম ও ঐতিহ্য। নিয়মের মধ্যে এগুলো করা হয়েছে। যারা করতে পারেনি এটা তাদের ব্যর্থতা। কিন্তু আ.লীগ করেছে এটাই আমাদের সাংগঠনিক সফলতা। সুতরাং এই নিয়ে প্রশ্ন রাখার সুযোগ নেই। আমি মনে করি সব বিচারে শনিবার যে নির্বাচন হয়েছে ঢাকা শহরের ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ইতিহাসে অত্যন্ত ভালো একটি নির্বাচন হয়েছে।
নির্বাচনে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় অপরাধীদের ধরার বিষয়ে কি ব্যবস্থা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ভাই কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মীর ওপর আক্রমণ বা পেশাগত কাজে বাধা দেওয়া সেটা কোনোভাই সমীচীন নয়। আমরা সেটার নিন্দা জানাই। তবে যে ঘটনাটি ঘটেছে আমি যতদূর জানতে পেরেছি ঘটনাটি বিএনপি কাউন্সিলর প্রার্থী ঘটিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে ঘটনাটি। নিশ্চয়ই যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরতাল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমত আজকে হরতাল ডাকা। আজকে ঢাকায় ঐতিহ্যের বই মেলা। বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বই মেলা। বই মেলার দিন হরতাল তারা ডেকেছে। আমি বাসা থেকে এখানে আসার সময় একবার যানজটের মধ্যে পড়েছি। তখন আমার ড্রাইভার বললো স্যার আজকে হরতাল। আমি বললাম তাই নাকি। হারতালের কোনো চিহ্ন আমি কোথাও দেখতে পেলাম না। গতকাল ভোটের মাধ্যমে বিএনপিকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। পাশাপাশি সব অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে।