
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গাড়ি চালকদের মতো রাজনীতিবিদরাও বেপরোয়া। রাজনীতিবিদদের কথামালা ফরমালিনের বিষের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তাদের কথার কারণে সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। জানি না কবে ধৈর্যের কাছে, শৃঙ্খলার কাছে ফিরবো।
আজ শনিবার বেলা সোয়া ১টায় রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১১ জন নারী গাড়ি চালকের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আখতার, প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন ও সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক আহমেদ নাজমুল হোসাইন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে বেপরোয়া চালক, সড়কেও বেপরোয়া, পথচারীও তেমন বেপরোয়া। কে কার কথা শোনে। আইন না মানার যে প্রবণতা এ দেশে, এটা কবে যে শেষ হবে। আমরা সবাই সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু সড়কেতো শৃঙ্খলা নেই। মানুষ হামাগুড়ি দিয়ে আইল্যান্ড পার হচ্ছে। মা সন্তানকে নিয়ে সড়ক পার হচ্ছে। অথচ পাশেই ফুটওভার ব্রিজ। কে কাকে বোঝাবে।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর সিটিং সার্ভিস হচ্ছে চিটিং সার্ভিস। গণপরিবহন নিয়ে এতো কাজ হচ্ছে, তারপরও ফলাফল আসছে না। বিআরটিসিতে শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখে না। এ সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা কঠিন। তবুও চেষ্টা করছি বাধার প্রাচীর ভেঙে ফেলার জন্য। আমি হতাশ হবো না, যদিও হতাশ হওয়ার মতো অনেক কারণ রয়েছে। সড়কে প্রতিনিয়ত মানুষ মরছে। মন্ত্রী হিসেবে আমি দায় এড়াতে পারি না। অনেক পরিবার সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নারী চালকরা ঠাণ্ডা মাথায় গাড়ি চালায়। এজন্য তাদের গাড়ি চালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া আমাদের প্রয়োজন। তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে। বিআরটিসিতে অনেক সিন্ডিকেট, তারপরও চেষ্টা করবো নারী চালক নিয়োগ দিতে।
বিএনপির অভিযোগ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জেতার জন্য সরকার সবকিছু ‘ব্যবহার’ করছে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা উল্টো চিত্রটাই জানি। বিএনপি’র নির্বাচনে হেরে যাবার আশঙ্কা আছে। বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য নানামুখি অজুহাত খুঁজছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা তথ্যপ্রমাণ দিক। কোথায় কোথায় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন দেখছেন। সেটাতো প্রমাণ করতে হবে তার প্রমাণ দিক। দেশবাসী জানুক, শুধু মনগড়া কথা বললে তো হবে না! বিএনপি তো অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ে। অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মতো বক্তব্য দিলে তো হবে না। কোথায় সরকার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বলুক। আমি পার্টির সেক্রেটারি। একটা অফিসেও আমি আজ পর্যন্ত যাইনি। তাহলে কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছে আমি জানি না। শুধু বললেই হবে না তথ্যপ্রমাণ দিক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএমে যদি কারচুপির কলাকৌশল কাজ করে, জালিয়াতির কাজ করে, তাহলে চট্টগ্রামে ভোটার উপস্থিতি বাড়তো না। এসময় ইভিএম পদ্ধতিতে কোথায় কোথায় কারচুপি হয়েছে, তার প্রমাণ দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার পরিবার আবেদন করলে কোনো সহমর্মিতা সাথে পাবেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখানে সহমর্মিতা সহানুভূতি এর বিষয় নয় এটা লিগ্যাল ব্যাপার। আসলে সরকারের পক্ষ থেকে সহমর্মিতা বা সহানুভূতির ঘাটতি তো নাই, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সহানুভূতির কথা বলে তো আমরা আদালতকে প্রভাবিত করতে পারি না সহমর্মিতা দিয়ে আইনকে প্রভাবিত করাও যায় না।খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে বিশেষ আবেদন করবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। যদি খালেদা জিয়ার পরিবার তার মুক্তির জন্য বিশেষ আবেদন করে সে ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী হতে পারে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশেষ আবেদন আদালতে নাকি সরকারের কাছে করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। এটা আমরা জানিও না, আর সরকারের কাছে আবেদনের বিষয়ও নয়।