
আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি। থানা হবে মানুষের আশ্রয়স্থল। ভূক্তভোগীরা সর্বপ্রথম সাহায্যের জন্য থানায় আসেন। থানার অফিসারদের মানসিকতা, আচার আচরণ ও ব্যবহার সর্বোত্তম হতে হবে।
শনিবার সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়াম বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির ৩৭ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির পাঁচজন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকে সম্মাননা তুলে দেন আইজিপি।
কমিউনিটি পুলিশিং এবং সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য কর্মরত তিনজন পুলিশ অফিসারকে ‘এস এম আহসান স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, সিনিয়র এএসপি ( হাকিমপুর সার্কেল, দিনাজপুর) মোঃ আখিউল ইসলাম বিপিএম-সেবা, অফিসার ইনচার্জ ( সদর দক্ষিণ মডেল থানা, কুমিল্লা) মোহাম্মদ মামুন-অর-রশিদ পিপিএম ও কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার (সিপিও) মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই মোঃ হারেস সিকদার।
নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর সুরক্ষায় ভিকটিম সাপোর্ট ও সমাজসেবা কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য প্রফেসর অনামিকা হক লিলি-ড. এম এনামুল হক এ্যাওয়ার্ড পান বগুড়ার গাবতলী সার্কেল এর এএসপি সাবিনা ইয়াসমিন।
এছাড়াও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া ২৪ জন কৃতিশিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
আইজিপি বলেন, এজন্য দেশের প্রায় ৭ শত থানার ওসিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডেকে এনে তাদের সাথে সরাসরি কথা বলেছি ও তাদের কথা শুনেছি। আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই, মানবিক পুলিশ হতে চাই। মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার। এই শ্লোগান ধারণ করে আমরা কাজ করছি।
এই সমিতির কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানিয়ে জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, মাত্র ৮৫০ জন সদস্য এই সমিতির জন্য অত্যন্ত কম। পুলিশের যারা রিটার্ড তারা সকলে এই সমিতির সদস্য হলে ভালো হবে। সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া উচিত। বর্তমান সারাদেশে যেভাবে মাদক ছড়িয়েছে সেক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব রয়েছে। সকলে যার যার অবস্থান থেকে মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস ও ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে কাজ করুন। আপনাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেকে উপকৃত হবে। পৃথিবীটা অনেক বড়। আমাদের নতুন জেনারেশন বর্তমানে সেলফোন, ট্যাবের মধ্যে আটকে রয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে বিশ্বকে দেখতে হবে। আমরা সকলে একটি পরিবার, এর মধ্যে কোন ভোদভেদ নেই। পুলিশে চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশে সন্তানদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। আপনারা আমাদের অংশ, আমরাও আপনাদের অংশ। এই সমিতির ফান্ডে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি ও সমিতির সভাপতি মোঃ আবদুর রউফ বলেন, গত ১ বছরে আমরা এই সমিতির ২৬ জন সদস্যকে হারিয়েছি। আমরা সকল নিহত কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমরা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের জন্য চিকিৎসা ফান্ড ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার জন্য শিক্ষাবৃত্তি ফান্ড করেছি। এক্ষেত্রে বর্তমান আইজিপিসহ কর্মরত পুলিশ অফিসাররা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন। এজন্য তাদের প্রতি আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
১৯৮২ সালের ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই সমিতির সদস্য রয়েছে ৮৩৯ জন। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৪টি শাখা অফিস থেকে এই সমিতি তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সূত্র- ডিএমপি নিউজ।