
আ.লীগের কতজন মন্ত্রী-এমপি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে অনির্বাচিত আ.লীগের এমপি-মন্ত্রীরা অনেক বড় বড় কথা বলেন। তারা বিএনপিকে উপদেশ দেন। আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই, ৭১ সালে যুদ্ধের সময় আপনাদের কতজন বাংলাদেশে রণাঙ্গনে থেকে যুদ্ধ করেছেন, তার হিসাব চাই আমরা।’
আজ রোববার বিকেলে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
ফখরুল বলেন, আজ যখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ৭৫’র হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না তখন কি একবারও চিন্তা করেন তাদের অতীত কী ছিল। আর জিয়াউর রহমানের অতীত কী ছিল। সেদিন আপনারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান গোটা জাতিকে যুদ্ধে যেতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন।
খন্দকার মোশতাক জিয়াউর রহমানকে প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করে সুবিধা করে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি তখন কোথায় ছিলেন। আপনি কি জানেন মানুষ তখন কী অবস্থার মধ্যে কী করেছিল। সত্য কথা সব সময় উচ্চারিত হবে এবং সত্যের জয় হবে।
কারাগারে খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য একটি মেসেজ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট দাবি করে ফখরুল বলেন, একটি মেসেজ চলে গেলো। ডাক্তারদের বলা হলো তোমরা যা লিখেছো, তা বদলাও। তারা পরিষ্কার করে লিখেছিল খালেদা জিয়া পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছেন। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। সবকিছু উপেক্ষা করে, চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া হলো জামিন দেওয়া হবে না।
‘কেন, কেন দেবেন না, একই ধরনের মামলায় আপনারা অনেক মানুষকে জামিন দিয়েছেন। রাজনীতিবিদদের জামিন দিয়েছেন। আপনাদের সাবেক মন্ত্রীদের জামিন দিয়েছেন। তাহলে তাকে (খালেদা জিয়া) জামিন দেওয়া হবে না কেন? কারণ তিনি গণতন্ত্রের নেত্রী।’
রোহিঙ্গাদের ইস্যু নিয়ে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সরকার কখনই বলেনি মিয়ানমার গণহত্যা করেছে। অথচ আফ্রিকার একটি দেশ গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য মামলা করেছে। সেখানেও বাংলাদেশ কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
তিনি বলেন, ভারতের সংসদে আলোচনা করা হচ্ছে বাংলাদেশিরা ভারতে যাচ্ছে, এটা মারাত্মক কথা। ৭০ বছর পরে নতুন আইন করে বলা হচ্ছে অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, মুসলিমদের দেওয়া হবে না। বিভাজন দেখেন, বৈষম্য দেখেন, ভিসা নিয়ে আপনি ভারতে যাবেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আপনি একদিন থাকলে দিতে হবে ২১ হাজার টাকা জরিমানা। আর আমাদের নিতাই দাদা, গয়েশ্বর দাদারা এটা করলে দিতে হবে ১শ টাকা। এটা সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িকতা। যেটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না।
‘সবচেয়ে সুন্দর দেশ হলো বাংলাদেশ। আর ওনারা (ভারত) সংসদে দাঁড়িয়ে বলছেন, বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হয়। একথা বললে বলবে যে আমরা ভারত বিরোধিতা করি। না, কখনও না। ভারত আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে। আমাদের বন্ধুত্ব ছিল, আছে।’
নিজেদের দলের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন রকম এজেন্ট ঢুকে পড়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা আমাদের মধ্যে ঢুকে বিভেদের সৃষ্টি করতে চায়। বিভিন্ন রকম কথা বলে বিভ্রান্ত করতে চায়।