
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সময় থাকতে মাথা ঠাণ্ডা করে পদত্যাগ করুন। আপনারা যেগুলো করছেন, এসব করে বার বার পার পাওয়া যাবে না। আপনারা দ্রুত সরে যান। দেশের মালিক জনগণ। তাদের হাতে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেন।
রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি ও নাগরিক শোকর্যালি আগে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঞ্চালনায় শোকর্যালি আগে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সহ সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যর উপদেষ্টা এসএম আকরাম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির মহানগর দক্ষিণের সহ সভাপতি নবী উল্লা নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।
গণফোরাম সভাপতি বলেন, এই ছেলেদের পশু বানানো হচ্ছে কেন? কারা এদেরকে পশু বানাচ্ছেন? যারা মানুষকে অমানুষ বানাচ্ছেন, আপনাদের কী শাস্তি হবে সেটা চিন্তা করেন। কোনো ছেলে পশু হয়ে মায়ের পেট থেকে জন্ম নেয় না। যেসব লোক মানুষকে পশু বানাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করুন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ এখানে কতিপয় লোককে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রশ্রয় দিয়ে পশু বানানো হচ্ছে।
ড. কামাল বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে দলের নামে এখন দেশ শাসন করছে এই দলে তো আমরাও সবাই ছিলাম। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। তাজউদ্দীন, নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে। সেই দলের নামে যে কাজগুলো হচ্ছে সেটাতে বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, নজরুল ইসলামকে অসম্মান করা হচ্ছে। অসম্মান করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে।
আবরারকে যারা হত্যা করেছে তারা কার আদর্শের অনুসারী প্রশ্ন করে তিনি বলেন, যিনি দেশ শাসন করছেন তার আদর্শের অনুসারী। এই কি আপনার আদর্শ? এই যদি আপনার আদর্শ হয়ে থাকে তাহলে আর এক মুহূর্তও আপনার সিংহাসনে থাকা উচিত না।
গণফোরাম সভাপতি আরো বলেন, এই জনসভায় যারা আছেন সবাই বলছে আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি দেশ শাসন করা থেকে সরে দাঁড়ান। নির্বাচন হোক। দেশকে শাসন দেশের মানুষই করবে। সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা ঠিক করবে কে দেশ শাসন করবে।
ড. কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বেঁচে থাকা নিয়ে সবাই আশঙ্কা করছেন। তিনি বিরোধী দলের নেতা ও তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অসুস্থ হওয়ার পরে ওনাকে মুক্ত করা হবে না, তিনি চিকিৎসা পাবেন না এটা আমাদের সভ্যতা ও সংবিধান বিরোধী। আমি তার মুক্তির বিষয়ে সবার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করছি।
আ স ম আবদুর রব বলেন, হাসিনা রক্ত ও লাশ চান।তাকে বিদায় নিতে হবে। সরকার ভীত হয়ে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। সমাবেশে কোনো বাধা মানা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বিএনপি কখনো ভারত বিরোধী আন্দোলন করেনি। তবে বাংলাদেশে স্বার্থ বিরোধী হলে বিএনপি তার প্রতিবাদ করবে।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজ্যত্ব চলছে। ঐক্যফ্রন্ট আছে। আর ঐক্যফ্রন্ট থাকবে। আজকে আমরা আন্দোলনের যাত্রা শুরু করতে এসেছি। কিন্তু তার আগেই সরকার ভয় পাচ্ছে।