
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী বলেছেন, আর কোনো নেতার এত জনপ্রিয়তা নেই। একমাত্র ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের আছে। উত্তরায় তো একজন আছে নিখিল নামে, তার তো এত জনপ্রিয়তা নেই। আমার সঙ্গে ওর একটু মিলতো কম। ও ছেলে পেলে নিয়ে বেশি থাকতে পছন্দ করতো।
রোববার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে সম্রাটের বাসায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযান চলাকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। শারমিন চৌধুরী বলেন, আমি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের মিসেস। আমার নাম শারমিন চৌধুরী। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১৯ বছর। আমাদের ওই ঘরে একটা ছেলে আছে। বাইরে থাকে। আমার স্বামী অ্যারেস্টেড হয়েছে তা আমি জানি। তবে দুই বছর আগে আমাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। সে যে ক্যাসিনোর মালিক ছিল তা আমি জানি না। আমি শুধু জানি সে যুবলীগের ভালো একজন নেতা। আমাদের মধ্যে দুই বছরের দূরত্ব। সে কারণে জানি না, সে ক্যাসিনো চালাতো কি না। ওর সম্পদ বলতে কিছুই নাই। যা ইনকাম করে ক্যাসিনো চালিয়ে, তা দলের জন্য খরচ করে, দল পালে। আর যা নিজে রাখে তা দিয়ে সিঙ্গাপুর কিংবা এখানে জুয়া খেলে। ওর নিজের সম্পদ বলতে কিছুই নাই। ওর জনপ্রিয়তা দেখেই বুঝতে পারি ও ক্যাসিনো চালিয়ে সেই টাকা দিয়ে দল পালে। তিনি বলেন, ওর নাম যেমন, তেমনি শুরু থাকতেই ও সম্রাট। ও কিন্তু অন্য সহসভাপতি বা অন্য নেতাদের মতো না। ওর চলাফেরা খুব ভালো। ও ক্যাসিনোতে কিভাবে আসছে আমি জানি না। কিন্তু ওর জুয়া খেলার নেশা আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে এই অভিযানের জন্য ধন্যবাদ জানাবো। তবে এই উদ্যোগ আরও আগে নিলে আরও ভালো হতো। সম্রাট সিঙ্গাপুর যেতো জুয়া খেলতে। জুয়া খেলা ছিল তার নেশা, কিন্তু সম্পত্তি করা তার নেশা ছিলো না। দোকান, গাড়ি এগুলোর প্রতি আগ্রহ নেই। যা জমাতো তা সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলেই শেষ করতো। সিঙ্গাপুরে অনেক নারীর সঙ্গে দেখা যায়, শুধু তা নয়- গত দুই বছর ধরে ও আমাকে সিঙ্গাপুর নেয় না। ওখানে বোধহয় মালয়েশিয়ায় বড় হওয়া চীনা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে, সেখানে ওর সঙ্গেই সময় কাটায় আরকি। সিঙ্গাপুরে মেয়েটার নাম সি লিং। ও আমারও ফ্রেন্ড। পরে ওর সঙ্গেই বেশি জড়িয়ে যায়।
শারমিন আরো বলেন, তিন-চার বছর ধরে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত। এর আগে ছিল না। এর আগে ঠিকাদারি করে আয় করতো। তবে দলের বড় নেতাদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। খালেদকে দেখছি, জি কে শামীম, সেলিম এদের আমি চিনি না। খালেক (খালেদ) কে আমি মাঝে মধ্যে অফিসে গেলে দেখতাম। এতটুকুই।
সম্রাটের এই স্ত্রী বলেন, আমি কখনো সামনে আসি সেটা ও পছন্দ করতো না। কিংবা কখনো ক্যামেরার সামনে কথা বলি। কোনো রাজনীতি করি এটা পছন্দ করতো না। আমি শুরু থেকেই নামাজ পড়া পছন্দ করি, ঘরে থাকা পছন্দ করি ও আমাকে এভাবেই রাখছে। যখন আমার বিয়ে হয়, তখন জানতামও না এমন জুয়া খেলার ব্যবস্থা ছিল না।