
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার দেওয়া নালিশকে মিথ্যা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে তার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রিয়া সাহার তথ্য অসত্য ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত। বাংলাদেশে আসলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া তিনি যেসব তথ্য দিয়েছেন অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে তার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এতে তার কোনো ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি যে স্বপ্ন দেখতেন একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ তৈরি হবে, সেটা নির্মাণে আমরা সফল হয়েছি। সেজন্য আজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আস্থা আসছে। সেজন্যই তাদের সংখ্যা এখন বেড়েছে।’
এ সময় সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ৮+ থেকে এখন ১০+ হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত সপ্তাহে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিষ্ণুতার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিজের অফিসে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে প্রিয়া সাহা নামে এক নারী ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
তিনি বলেন, এখন সেখানে এক কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি। হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইটের বিবৃতিতে বাংলাদেশি ওই নারীকে মিসেস সাহা পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার হওয়া প্রিয়া সাহার ওই অভিযোগের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তবে, প্রিয়া সাহার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত কি না- জানতে চাইলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, প্রিয়া সাহার বক্তব্য তো প্রিয় সাহারই। আমাদের সংগঠন এরকম কোনো বক্তব্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কাউকে তো বলে নাই যে, তুমি এভাবে বলবা। অতএব প্রিয়া সাহার মত প্রিয়া সাহারই।’
তবে তিনি বলেন, ‘প্রিয়া সাহার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, এ অভিযোগ সত্য। তার ঘরবাড়ি পুড়ানোর ঘটনা দুই-এক মাস আগের।’
এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার, প্রিয়া সাহার অভিযোগ সত্য নয় বলে গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় একে-অপরকে শ্রদ্ধা করে।’