
সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা॥
“দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত হোক”এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সংবিধানের আলোকে দেশের সকল জনগোষ্ঠীর সমঅধিকারের জন্য রাণীশংকৈল মিলনায়তন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে জাহাঙ্গীর সরকারের সভাপতিতে¦ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রানীশংকৈর উপজেলা ভূমিকর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যান অফিসার রফিকুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আলী শাহরিয়ার,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা ও শিক্ষা অফিসার মুকছুদুর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পৌর আ’লীগের সম্পাদক সাহিরুল ইসলাম, মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মহাদেব বসাক, এনএনএমসি’র লিয়াঁজো অফিসার সুলতানা আফরীন, অ্যাডভোকেসি সদস্য খায়রুল আলম,রাণীশংকৈল প্রেসক্লাব সম্পাদক সফিকুল ইসলাম শিল্পী, প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির,আদিবাসী সংগঠনের সম্পাদক সামু এল হেমরম, সাবেক সভাপতি মানিক সরেন (মাষ্টার),কবিরাজ মর্মূ,বাতাসি মর্মূ প্রমূখ। দলিত ও আদিবাসীদের সংবাদ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রানীশংকলে উপজেলা অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম ক্ষদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দলিত জনগোষ্ঠীরর অধিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, ন্যায্য অধিকারে প্রবেশমাতা তৈরির লক্ষে সরকারী বেসরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংলাপ, কার্যকর সম্পর্ক তৈরি, সমমনা সম্পর্ক ও নেটওয়ার্ক সমুহের সাথে যোগাযোগ, সমতলের ক্ষুদ্র নৃ -গোষ্ঠী ও দলিত সম্প্রদায়ের জন্য বিদ্যমান চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় ইস্যুভিত্তিক মানব বন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও জাতীয় পর্যায়ের নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক দলিত এবং সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস থাকলেও তারা সংবিধানের অঙ্গীকার অনুযায়ী উন্নয়নের মূল¯্রােতধারায় একভীত হতে পারছে না। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশে সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা থাকলেও আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও দলিত এবং সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠী সমাজে অত্যন্ত অবহেলিত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদেও মধ্যেও অন্যতম। শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও পুষ্ঠি.আয় ও কর্মসংস্থান ইত্যাদিতে তারা যেমন পিছিয়ে আছে মৌলিক মানবাধিকার প্রাপ্তির দিক থেকেও।স্থানীয় সরকার প্রশাসনে তাদেও অত্যন্ত সীমিত প্রতিনিধিত্ব,সমতলের আদিবাসীদের বেদখল হয়ে যাওয়া,অন্যদিকে দলিতদের আবাসন সংকট,দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য জাতীয় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকা,শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠী হিসাবে তাদেও জন্য কোটা বরাদ্দ না থাকা, সামাজিক সুরক্ষা সেবা গুলো তাদেও জন্য অন্তর্ভুক্ত হতে না পারা,মৌলিক রাষ্ট্রীয় সেবাসমূহে তাদেও অভিগম্যতা না থাকা,জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিপন্নতা,অস্পৃশ্যতা এবং দলিত-সমতলের আদিবাসীদেও নারী সহিংসতার মত কারণে তারা সমাজের মূল ধারায় মানুষের মতো একই অধিকার ভোগ করতে পারছে না । দলিত ও আদিবাসীদের সংবাদ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ,হোসেনগাঁও,ও নন্দুয়ার ৩ টিইউনিয়নে মোট ১৭ টি গ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সেবার আলোকে এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এফজিডি ( ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন) করে আংশিক তথ্য সংগ্রহ করে যা বর্তমানের দলিত এবং আদিবাসীদের পরিস্থিতি বুঝা যায়। তথ্য মতে, ৩৮৫ টি পরিবারের মধ্যে মোট ১৬৭৯ জন সদস্য বসবাস করে যাদের মধ্যে ৩৮৫ জন দলিত এবং আদিবাসী। তাদের মধ্যে বয়স্ক ভাতা পেয়েছে ৩৮, বিধবা ১৪,প্রতিবন্ধী ১৪,ভিজিডি ২২ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৮০% পরিবারই অন্যের জমিতে বসবাস করে। আর দলিতদের এখনো খাওয়ার হোটেলে প্রবেশাধিকার পান না।বক্তারা বলেন, জাত পাত ও পেশা ভিত্তিক বৈষম্য প্রতিরোধ এবং সকল প্রকার বৈষম্যে শাস্তির বিধান রেখে শিক্ষা, সামাজিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার দলিত, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বৈষম্যে বিলোপ আইন দ্রুত পাশ করার দাবী জানান।