
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ক্রসফায়ারের নামে কোনো বাহিনী কাউকে হত্যা করছে না।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও বিজি প্রেস মাঠে আয়োজিত মাদকবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মোসাদ্দেক মো. আবুল কালাম, কাউন্সিলর মুন্সি কামরুজ্জামান কাজল, মনো চিকিৎসক মোহিত কামাল, মানসের অধ্যাপক অরুপ রতন চৌধুরী।
সুশীল সমাজের অনেকেই সমালোচনা করছেন বলে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাকি নিরাপরাধীদের ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করছে। এসব বলে কেবল সন্ত্রাসীদেরই উসকে দেওয়া হয়। এতে সন্ত্রাসীরা আরও পার পেয়ে যায়। তারা কি দেখে না, মাদকে একটা দেশের যুবশক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছিল।’ প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় পদক্ষেপে মাদকের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক কারবারিদের ধরতে গেলেই তারা অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করছে। সাধারণ মানুষের যেমন আত্মরক্ষার অধিকার আছে, আমাদের বাহিনীরও আছে। যারাই সারেন্ডার করবেন, মাদকের ব্যবসা ছাড়বে, তাদের শেষ সুযোগ দেয়া হবে। নইলে জেলে যেতে হবে। আর অস্ত্রের ঝনঝনানি যদি দেখাতে চান তাহলে কী পরিণতি হতে পারে তা আপনারাই জানেন।
তিনি বলেন, বিদেশে দেখেন যেখানেই মাদকের ব্যবসা সেখানে কী পরিমাণ অস্ত্রের ব্যবসাও হচ্ছে। আমরা বলেছি, আইনী সহযোগীতা করবো, সারেন্ডার করেন, মুচলেকা দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি বিজিবিকে নির্দেশনা দিয়েছি কোনোভাবে সীমান্ত দিয়ে যেন মাদক না ঢোকে। কোস্টগার্ডকে বলেছি উপকূলে নজরদারি রাখতে। এরপরেও মাদক আসছে। আমরা মাদক তৈরি করি না, তবুও মাদক আসছে। মাদক আমাদের যে কী ক্ষতি করছি তা ঘরে ঘরে জানতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইয়াং গ্রুপ সীসা বারে যায়। হুক্কা টানে। আগুনে ইয়াবা গুড়া করে টানছে। সেজন্য আমরা সীসাবারও নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কঠিন সাজার ব্যবস্থা করে নতুন আইন করেছি। এই আইনের কঠোর প্রয়োগ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যখন পুরো বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছিল তখন আমরা বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ভয়ংকর জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। যারা(জঙ্গিরা) বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর পায়তারা করছিল। আবার জঙ্গিবাদের মতোই মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, যুব সমাজ ছাত্র সমাজ দৃঢ় প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। আজ যুব সমাজের বড় অংশ মাদকাসক্ত। তাদের জন্য আমরা কি করতে পেরেছি? আমাদের সন্তানরা যেন মাদকাসক্ত না হয়, মাদক নেয় কিনা খোঁজ রাখা, খেয়াল রাখা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এখন আর ঠুটো জগন্নাথ নেই। জনবল দ্বিগুন করেছেন ৩২২২ জন জনবল করা হয়েছে। আগে কখনো পায়ে হেঁটেও মাদকবিরোধী অভিযানে যেতো কর্মকর্তারা। এখন প্রত্যেক জেলায় কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি দেয়া হয়েছে। যে কারণে কাজে গতি ফিরেছে।