
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিদেশিরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।
কিছুদিন পূর্বেও যেখানে বিদেশি পর্যবেক্ষেরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে আগ্রহী ছিলেন না, সেখানে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক জোট ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এখন তারা ভোট পর্যবেক্ষণ নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
ইসির কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এ মাসের শুরু থেকে আইআরআইসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ঢাকায় অবস্থিত দূতাবাসগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ শুরু করেছে। তবে আগামী মাসের শুরু থেকে বিদেশিদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়ায় গতি আসতে পারে।
এদিকে, বিদেশিরা পর্যবেক্ষণে আগ্রহী হয়ে উঠলেও নির্বাচন কমিশন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালায় এবার প্রথমবারের মতো কিছু ধারা যুক্ত করেছে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রণীত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার অথবা ফেইসবুক, টুইটার বা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। সব সময় ইসির সরবরাহ করা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার আইনগত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। গোপনে বুথে যাওয়া যাবে না। ভোট গণনার সময় একটি পর্যবেক্ষক দল থেকে একজন উপস্থিত থাকতে পারবেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগে আবেদন করতে হবে। আবেদন যাচাই করে অনাপত্তির জন্য তা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে ইসি।
খোঁজখবর নিচ্ছে বিদেশিরা
ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের পর থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ পর্যবেক্ষণের বিষয়ে যোগাযোগ করছে।
এ মাসের শুরু থেকে তাদের এই যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচন ও গণতন্ত্রবিষয়ক মার্কিন গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই), নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার সঙ্গে যুক্ত ব্যাংককভিত্তিক সংস্থা অ্যানফ্রেল এবং ঢাকায় ফ্রান্স ও জাপান দূতাবাস এ যোগাযোগ শুরু করেছে।
এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থিত আরও কয়েকটি দূতাবাস নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নানান বিষয় নিয়ে গত দুই সপ্তাহে কমিশনের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংস্থা বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ জানায়। ইসি ওই সংস্থাগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানাবে।
আবার কমনওয়েলথসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা সাধারণত আমন্ত্রণ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্ত হয় না। এ ক্ষেত্রে এ তালিকার সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে যেসব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চাইবে, তাদের সরাসরি ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
সাধারণত বিদেশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের কাজের সঙ্গে ইসি সরাসরি যুক্ত থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রক্রিয়ায় সহযোগীর ভূমিকায় থাকে। তবে গতকাল এ নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেন, বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত নির্বাচনের আগে একটি সেল গঠন করা হয়। এ ধরনের কোনো সেল এখনো পর্যন্ত হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর এ কাজ শুরু হতে পারে।সূত্র-আরটিএনএন