
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ৭ দফা দাবি তুলে ধরে সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
রবিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এই চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন গণফোরাম নেতা আ অ ম সফিউল্লাহ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ চিঠি গ্রহণ করেছেন। চিঠিতে ড. কামাল হোসেন সাক্ষর করেছেন।
গত ২৩ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ওবায়দুল কাদেরকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
শনিবার এ চিঠি পাঠানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। চট্টগ্রামে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের কারণে নেতারা সবাই সেখানেই ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংলাপের উদ্যেগ নেওয়ার তাদিগ দিয়ে চিঠি দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছেও একটি চিঠি পাঠানো হয়।
যেখানে ঐক্যফ্রন্ট নেতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু স্বাক্ষর করেছিলেন। তবে এই চিঠি ওবায়দুল কাদেরর পক্ষ থেকে কেউ গ্রহণ করেননি।
এর আগে দুপুরে জোটের নেতারা জানান, নিজেদের প্যাডে ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য সম্বলিত একটি চিঠি তৈরি। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে রবিবার সকালে চিঠি পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবন ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও সাড়া মিলেনি।
দুপুরে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু জানান, আজ সকালে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপকে ফোন দিয়েও পাইনি।
গণভবনের দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তিকেও পাওয়া যায়নি। আমরা তো চিঠি তাদের টেবিলে রেখে আসতে পারি না। আমরা চেষ্টা করব আজকালকার মধ্যেই চিঠি পৌঁছে দিতে। কিন্তু সরকার পক্ষ সাড়া দিচ্ছেন না।
সাত দফা হলো: ১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।
২. যোগ্যব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৩. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিরনিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।
৫. নির্বাচনের ১০দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণে পূর্ণ ক্ষমতা ইসির ওপরে ন্যাস্ত করতে হবে।
৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।
৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনেরফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো ধরনের মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ চারটি দলের সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করে। নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যও ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।