
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া (কাটাখালী) নদীর বাঁধের পাইলিং কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ জন নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে করা এ পাইলিং কাজের অনিয়মের বার বার অভিযোগ করেও পায়নি কোন প্রতিকার। ফলে চটের পচাঁ এসব পাইলিং কাজ সম্পূর্ন না হতেই চটের বস্তা ফেটে বালু বেড় হয়ে যাওয়ায় আবারও যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ধ্বসের আশংকায় চরম দু:চিন্তায় দিন কাটছে নদী পারের মানুষের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের বিষপুকুর নতুন বাজার এলাকায় করতোয়া(কাটাখালী) নদীর ভাঙ্গন রক্ষায় চলতি বছরে ২৮৫মিটার বাঁধের পাইলিং কাজে টেন্ডার দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই মোতাবেক ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে গাইবান্ধার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ,এইচ,এম,সি,জেভি গত ৩ মাস পূর্বে এ বাঁধের পাইলিং শুরু করলেও এখনও সম্পূর্ন হয়নি কাজ। শুরু থেকে এ বাঁধের পাইলিং কাজে ডালিয়ার মোটা বালু ব্যবহার করার কথা থাকলেও ঠিকাদার নদী থেকে বালু মাটি তুলে নাম মাত্র সিমেন্ট পাটের ব্যাগে ভরে পাইলিং কাজ শুরু করে। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী বাঁধের পাইলিং কাজে শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ করলেও কোন কর্নপাত করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে ঠিকাদার দায়সারা পাইলিং কাজ করায় এসব বালুর বস্তা ফেটে নদীর পানিতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা জানান, এ বাঁধের পাইলিং কাজে ডালিয়ার মোটা বালু ও ৬ ভাগের এক ভাগ সিমেন্ট দিয়ে ব্যাগে জমাট করে পাইলিং কাজ করার কথা ছিল। কিন্ত সেখানে ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় মোটা বালুতো দূরের কথা নদীর চর থেকে বালু মাটি আর ১২ ভাগের ১ ভাগ নামমাত্র সিমেন্ট দিয়ে পাটের ব্যাগে করে পাইলিং কাজ করা হচ্ছে। যা নদীর পানিতে চটের বস্তা পঁচে বালু বেড় হয়ে নদীর পানির সাথে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এসব অনিয়মের সাথে এলাকার ২/৩জন প্রভাবশালী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট এসও জড়িত থাকায় এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানান তারা। এ বাঁধের পালিং কাজের অনিয়মের উচ্চ পর্যায়ের সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুর্ণীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে রাখালবুরুজ ইউপি চেয়ারম্যান সাহাদত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আমার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের নতুন বাজার বিষ পুকুর নদীর বাঁধে বর্তমান সরকার ২৮৫মিটার বাঁধের পাইলিং কাজে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। এ পাইলিং কাজটি আসলে নদী থেকেই বালু চটের বস্তায় ভরে নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে। এ বাঁধের অনিয়ম বিষয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে কথা বলেও কাজের উন্নয়ন হয়নি।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট গাইবান্ধার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ,এইচ,এম,সি,জেভির প্রো: খন্দকার জুয়েলের মোবাইল ফোনে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমাদের এ বাঁধের পাইলিং কাজের অনিয়মে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ জড়িত নেই। অনিয়মের প্যাসিফিক অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।