
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজকে সয়লাব হয়ে গেছে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ওয়ার্টশপসহ বিভিন্ন জায়গায় যে, তিনি (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) একটা বই লিখেছেন। সেই বই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা আমাজান প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে উনি অনেক কথা লিখেছেন। সেসব কথা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রমাণ করে না। প্রমাণ করে, প্রশাসন অর্থাৎ সরকার ও তার অন্যান্য বিভাগ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তাহলে কী দাঁড়ালো? পঁচাত্তরের যেটা করা হয়েছিল আইন করে। এখন করা হচ্ছে কৌশলে। কিন্তু বাস্তবতা একই।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ভূমিকা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে বিচার বিভাগ আইন প্রশাসনের অধীনে নয়। কিন্তু বাস্তবে অবস্থা কী? নিম্ন আদালতের এক বিচারক তারেক রহমান সাহেবকে খালাস দিয়েছিলেন- তিনি দেশে থাকতে পারেননি। সর্বোচ্চ আদালতে প্রধান বিচারপতিসহ সব বিচারপতিরা একমত হয়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করলেন। সেই রায়ে কিছু মন্তব্য করার জন্য প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ এবং দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তার অর্থ কী? বিরোধী রাজনৈতিক দল থাকতে পারবে না, স্বাধীন মিডিয়া থাকতে পারবে না, স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকতে পারবে না। তাহলে গণতন্ত্র থাকবে কি করে?’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, যাকে ঘিরে এক বছর আগে বাংলাদেশের বিচারঙ্গনে রীতিমত ভূমিকম্প ঘটে গিয়েছিল, সেই বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিদেশে বসে একটি বই লিখেছেন, যেখানে দেশত্যাগ ও পদত্যাগ নিয়ে এসেছে বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য।
তিনি আরও বলেন, এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে আত্মজীবনীমূলক এই বইয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দাবি করেছেন, তিনি দেশ ছেড়েছেন ‘হুমকির মুখে’; একই কারণে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। আর সেই হুমকি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা-ডিজিএফআইয়ের তরফ থেকে এসেছিল বলে দাবি করা হয়েছে বইটিতে।
এ সময় সরকারকে নিয়মতান্ত্রিক পথে আসার আহবান জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘জনগণ চায় খালেদা জিয়া বেরিয়ে আসুন। তার নেতৃত্বে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচনে জনগণ সিদ্ধান্ত দেবে কারা আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আমরা সেই দাবি করছি। সরকার এই দাবি না মানলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার যদি নিয়মতান্ত্রিক পথে না হাঁটে, মানবিক পথে না হাঁটে, যদি জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন অব্যাহত রাখে তাহলে নিশ্চয়ই অতীতে যারা স্বৈরশাসক ছিলো তাদের বিরুদ্ধে যেমন গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধেও হবে। বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবে ‘
সংগঠনের সহ-সভাপতি মজিবর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, ফরিদ উদ্দিন, শাহজাহান সম্রাট, শাহরিন ইসলাম শায়লা প্রমুখ।