
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে, সেবা না পেয়ে জরুরী বিভাগের সামনে ভ্যানের উপর জনসম্মুখে সন্তান প্রসব করেছেন একজন প্রসূতি মা।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৭আগষ্ট) রাত সারে ১০টার দিকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের বাসীন্দা কৃষক চাঁন মিয়ার স্ত্রী লাইজু বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে রাত সারে ১০টায় গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার রিপন কুমার মোস্তফি প্রসব বেদনায় ছটফট করা চাঁন মিয়ার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি না করে ঔষধ কম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলছিলো।
এ সময় রোগীর প্রসব বেদনা আরো তীব্র হলে জরুরী বিভাগের পাশে থাকা এক মহিলা এগিয়ে আসলে তার সহযোগীতায় খোলা আকাশের নিচে ভ্যানের উপর জনসম্মুখে একটি পুত্র শিশুর জন্ম হয়। পরে রোগীর স্বজন ও হাসপাতালেরর লোকজনের তোপের মুখে প্রসূতি মা ও তার বাচ্চাকে হাসপাতালের বেডে নেয়া হয়।
ভুক্তভোগী চাঁন মিয়া বলেন, তার স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় ছটপট করছে সে তখন বারবার দায়িত্বরত ডাক্তারকে অনুরোধ করেও সেবা পাননি। অবশেষে খোলা আকাশের নিচেই তার স্ত্রীকে সন্তান প্রসব করতে হয়েছে। এই জন্য তিনি এই ঘটনার বিচার চান।
অপরদিকে ঐ প্রসূতি মা বলেন, তিনি যখন প্রসব ব্যাথায় কাতর তখন ঐ হাসপাতালের সেবিকারা তাকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেনি ।
সে সময় ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদক কাকতালীয়ভাবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরে তিনিও চিকিৎসক রিপন কুমার মোস্তফিকে তার কক্ষের বাহিরে বারান্দায় অপেক্ষমান প্রসব বেদনায় কাতর প্রসূতি লাইজু বেগমকে চিকিৎসা দিতে অনুরোধ করেন কিন্তু জরুরী বিভাগের সামনে ভ্যানের উপর রোগী থাকার পরেও তিনি রাস্তায় রোগী দেখবেননা বলে জানান। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নিতে গেলে তিনি তার কর্তব্যহীনতার কথা অস্বীকার করেন।
এই বিষয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার অমল চন্দ্র সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনা আমি লোক মুখে শুনতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ফোন করে ওই শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কর্তব্যহীনতার প্রমানিত হলে ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত ১২টায় প্রসূতি লাইজু বেগম গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডেলিভারী রুমে অবস্থান করছিলো।