
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পর আবার নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে তাকে সুস্থ পেয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। তাই তাকে আবার ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।
ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার সকালে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলে। বৃহস্পতিবার মেডিকেল বোর্ড আদালতে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দেবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রবিবার জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সাক্ষাৎকার দেন একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে।
সেদিন বিকেলেই শহিদুল আলমকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চায় পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি শহিদুল আলম তার ফেসবুক টাইমলাইনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কল্পনাপ্রসূত অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণিকে শ্রুতিনির্ভর (যাচাই-বাছাই ছাড়া কেবল শোনা কথা) মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উসকানি দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকররূপে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন করেছেন। আদালত শুনানি শেষে তার সাত দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শহিদুল আলমকে আটকের পর নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা নিয়ে এবং চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ রিট করেন। এতে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিআইজি (ডিবি) ও রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা হয়।
শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট শহিদুলকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবিলম্বে বিএসএমএমইউয়ে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। দুপুরে তা চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য তা পাঠিয়ে দেন।