
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্যই আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে কেয়ারটেকার সরকার প্রক্রিয়াকে বাতিল করেছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য পরীক্ষিত একটা প্রক্রিয়া ছিল। অথচ এটি ছিল আওয়ামী লীগের দাবি। আর ফর্মুলা ছিল জামায়াতের। এই দাবিতে আন্দোলন করেছে আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাতীয় পার্টি। এ জন্য তারা ১৭৩ দিন হরতালও করেছে। এ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ দুই বার ক্ষমাতায় এসেছে, বিএনপি একবার নির্বাচিত হয়েছে। অথচ ক্ষমতা দখল করতে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে আদালতের মাধ্যমে কেয়ারটেকার পদ্ধতি বাতিল করেছে।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ সরকার আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে চায়। আর সেজন্য তারা আবার পাঁয়তারা শুরু করেছে। কীভাবে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘ করা যায়। বিএনপি ও ২০ দলকে বাইরে রেখে আবারও একতরফা ভোট করে ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া সরকার। কিন্তু এবার জনগণ সেটি হতে দিবে না। খালেদা জিয়া ও বিএনপি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।
সাবেক এ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘দিন-তারিখ ঠিক করে, হুইসেল দিয়ে আন্দোলন হয় না। আপনারা কোটাবিরোধী আন্দোলন দেখেছেন, কীভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজপথ কাঁপিয়ে তুলেছে। অথচ আন্দোলন শুরুর আগের দিনও কেউ জানতো না এর কথা। এমনকি সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছেও এত বড় আন্দোলনের খবর ছিল না। বাংলাদেশের ছেলেরাই আন্দোলন করেছে। সময়মতো দেশের জনগণও এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করবে।’
আসন্ন তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, এসব সিটিতে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপি প্রার্থী, এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের হামলা মামলা ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন খুলনা ও গাজীপুরের মতো নতুন কোনো মডেল সাজিয়ে তিন সিটির ফল নিজেদের পক্ষে নিতে চায়। আর সেজন্য ইসি ও পুলিশের সহযোগিতায় বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও নির্যাতন করছে।
ইসির সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন শুধু সরকারের হুকুম পালনে ব্যস্ত। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ করলেও তারা নির্বিকার। সরকার যেভাবে চায় কমিশন সেভাবে কাজ করছে। আমরা আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে এ কমিশনের পদত্যাগ করা উচিত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক, সুশীল সমাজ, বিদেশি বন্ধু সবাই বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। আর সেটি করতে হলে সবার আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে, বিএনপি ও ২০ দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হতে হবে। এটি না হলে কখনো অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন হবে না।