
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ার দেখে পরাজয়ে শঙ্কিত হয়ে বোমা মেরে ভয় দেখিয়ে বিএনপির বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে অবৈধ ও ফ্যাসিস্ট সরকার।
বুধবার রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ধানের শীষ প্রতিকের গণসংযোগ কালে সাংবকাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ যদি মনে করে গাজীপুর ও খুলনার মত ভোট জালিয়াতি ও জোর করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করাবে তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। কেননা, বিএনপি একটি আদর্শবাদী ও সুশৃংখল রাজনৈতিক দল।
এই সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে ফেলেছে। দেশের মানুষের এখন কোন স্বাধীনতা নেই। খোলা কারাগারে পরিণত করেছে। প্রতিদিন জনগণকে বিনা বিচারে হত্যা, খুন, গুম ও নির্যাতন করছে। বিএনপি ও ২০দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বিনা মামলায় ও বিনা গ্রেফতারী পরোয়ানাতে পুলিশ গ্রেফতার করছে। রাতের অন্ধকারে বাড়িতে গিয়ে হামলা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করছে। রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও আইনশৃংখলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনী ওয়াদা ভঙ্গ করে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে শহরের পরিবেশ নষ্ট করেছে। এর পিছনে কয়েক কোটি টাকা ব্যায় করেছে। তিনি নির্বাচিত হলে রাজশাহী সিটিবাসীর উন্নয়নতো দুরের কথা আরো বিপদে ফেলে দেবে বলে জানান এই নেতা।
তিনি আরো বলেন, নিয়মনীতি ভঙ্গ করে লিটন সরকারী কর্মচারীদের ভয় দেখিয়ে ও জোর করে নৌকার পক্ষে কাজ করাচ্ছে। অফিসের কাজ বাদ দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা চাকরীর ভয়ে লিটনের পক্ষে কাজ করছে। যা সংবিধান ও নির্বাচনী নীতি পরিপন্থি বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর অমানবিক নির্যাতন করছে। তাদের চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মৌলিক চাহিদাগুলো এই অর্নিবাচিত সরকার কেড়ে নিয়েছে বলে জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দেশের স্বার্থে, রাজশাহী সিটিবাসীর স্বার্থে এবং রাজশাহীর উন্নয়নে ধানের শীষে ভোট প্রদান করার জন্য সিটিবাসীর প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা মিনু বলেন, রাজশাহীতে কোনভাবেই বিএনপি জয়লাভ কতরতে পারনে না। চারিদিকে এখন ধানের শীষের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বেড়ে গেছে। সকল ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা নির্বাচন মুখি হয়েছে। তারা দিনরাত নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএনপি মাঠে নামাতে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ বেড়ে গেছে। ভোটাররা ধানের শীষকে সাদরে গ্রহন করে নিয়েছে। সকল বাধা অতিক্রম করে ভোটারগণ ৩০তারিখে ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং ভোট প্রদান করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সকল নেতাকর্মীকে সাধারণ ভোটারদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার আহবান জানান তিনি।
মেয়র প্রাথী বুলবুল বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে। আর সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর কি অবস্থা হবে সময় তা বলে দিবে বলে তিনি উল্লখ করেন। কারন বাংলাদেশের মানুষ আর এই সরকারকে কোন ভাবেই সহ্য করতে পারছেনা। দেশ দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডে ভরে গেছে। সরকারের এই সকল কর্মকাণ্ডে জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। রাজশাহী শান্তির শহর। সেই শহরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্দেশে অশান্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ধানের শীষে প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা করে সাংবাদিকসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের আহত করেছে। আওয়ামী লীগের চরিত্র এটাই বলে তিনি জানান। সরকার দলীয় প্রার্থী রাজশাহীকে বদলানোর নামে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ধানের শীষের প্রচারণায় প্রতিনিয়ত বাধা প্রদান করছে। নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, মাইকিং করতে বাধা প্রদান সহ পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ড্রেনে ফেলে দিচ্ছে। তাদের এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। জনগণ এখন আওয়ামী লীগের হাত রক্ষা পাওয়ার জন্য ধানের শীষে ভোট প্রদান করার জন্য দিন গুনছে। সরকার দলীয় প্রার্থী কোটি কোটি টাকা দিয়ে কর্মী ভাড়া করে ভোটারদের নিকট পাঠিয়েও কোন ভাল ফল পাচ্ছেনা। এই অবস্থা দেখে এখন তারা ভীন্ন পথ ধরেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নির্বাচন বানচার করার পাঁয়তার করছে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি কেন্ত্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, পুঠিয়া দূর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তাফা, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, ২৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, ২৯নং যুবদলের সভাপতি উকিল, সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, মতিহার থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম টিয়া, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা আবীব, ২৯নং মহিলা দলের সভানেত্রী জাহিদা বেগম, সাধারণ সম্পাদক নাজেরা ও জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রোকসানা বেগম সহ অত্র ওয়ার্ডে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সহশ্রাধিক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।