
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে আওয়ামী লীগের নেতা আখ্যায়িত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন গঠনে শুরু থেকেই সরকারের গলদ রয়েছে। গঠনের সময় লোক দেখানো আলোচনা করে তারা তাদের পরীক্ষিত লোকদেরকে এখানে স্থান করে দিয়েছে। বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনতার মঞ্চের নেতৃত্বদানকারী অর্থাৎ আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি (সিইসি) যে কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনা করেছেন প্রত্যেকটি জায়গায় জনগণের পাশে না থেকে সরকারের আজ্ঞাবাহী হয়ে কাজ করে তাদের ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করেছে’।
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু স্বাভাবিক নির্বাচন হবে কেউ বিশ্বাস করে না। এদের দ্বারা জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু আশা করা যায় না’।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং সরকারের নীল নকশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করাই বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ এমন মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার আদায় করতে পারে এমন নির্বাচন আমাদেরকে আদায় করে নিতে হবে। দেশ স্বৈরাচার মুক্ত না হলে এটা কোনোভাবেই সম্ভব না। কোনো স্বৈরাচার ইচ্ছে করে ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েই আমাদেরকে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে’।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন কোনো কোটাই থাকবে না। সরকার কতটা ভীতু যে ছাত্রদের ন্যায্য দাবিকে দাবিয়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রতারণা করলেন’।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে রাখা সোনার চাকতি ভুতুড়েভাবে মিশ্র ধাতু হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজকের পত্রপত্রিকা দেখেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ রাখা ছিল কিন্তু সেটি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের জায়গায় ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ হয়ে গেছে। জমা রাখা হয়েছিল সোনার চাকতি, তা হয়ে আছে মিশ্র ধাতু। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এ ভয়ংকর অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে এ অনিয়ম পেয়েছে’।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে এবং সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, সাবেক সাংসদ আহসান হাবিব লিঙ্কন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।