
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর গীর্জার সামনে আদিবাসী সাঁওতাল ও বাঙ্গালিদের সাথে আজ রোববার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জনউদ্যোগ যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে ওই সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম প্রধান, গণেশ মুর্মু, সুফল হ্রেমব্রম, থমাস হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, রেজাউল করিম, স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, অলিভিয়া মার্ডি, রাফায়েল হাসদা প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্মের নিরীহ আদিবাসী-বাঙালিদের উপর সংঘটিত হামলার ঘটনার প্রায় দু’বছর হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী সাঁওতাল-বাঙালিরা হত্যা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ শিকার হয়ে এখন মানববেতর জীবন যাপন করছে। কর্মসংস্থাানের অভাবে তারা চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। স্কুল ঘর পুড়িয়ে দেয়ার কারণে তাদের সন্তানেরা ২ বছর ধরে ঠিকভাবে পড়াশুনা করতে পারছে না। স্থাানীয় প্রশাসনকে এ বিষয় অবহিত করা হলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থাা নেয়া হচ্ছে না। ৩ আদিবাসী সাঁওতাল নিহত এবং অনেকেই আহত অবস্থাায় পঙ্গুত্ব বরণ করলেও তার কোন বিচার বা ক্ষতি পূরণের দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বক্তারা অবিলম্বে আদিবাসী সাঁওতালদের তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি পুনর্বাসন এবং পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থা আদিবাসী-বাঙালিদের খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সহায়তার দাবী জানান তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নবেম্বর সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামারের সম্পত্তি নিয়ে আদিবাসী-বাঙালীদের সাথে পুলিশ ও এলাকার সন্ত্রাসীদের এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ৩ আদিবাসী নিহত হওয়ার দাবি করা হয়েছে। সেইসাথে আহত হয়েছে অনেকে। বাগদা ফার্মে স্থাাপতি তাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর এবং তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।