
একজন শিশু হিসেবে, হালিমা অ্যাডেন কাদা খেতে পছন্দ করতেন।
হালিমাকে নিয়ে বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘Teen Vogue’ এর কভার স্টোরির প্রথম লাইন এটি।
ম্যাগাজিনটি তার জুলাই ডিজিটাল কভারে কেনিয়ার শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেয়া প্রথম মার্কিন হিজাবি মুসলিম মডেল হালিমা অ্যাডেনকে নিয়ে ফিচার করেছে।
১৯৯২ সালে সোমালিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে তার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে কেনিয়ার কাকুমা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। এরপর তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়। ওই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর।
হালিমার বয়স এখন ২০ বছর এবং আমেরিকার একজন সফল মডেল। তিনি একই সঙ্গে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব পালন করছেন। সাবেক ‘মিস মিনেসোটা’ সৌন্দর্য প্রতিযোগী সবসময় মাথায় হিজাব পরিধান করে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত সব প্রদক্ষেপের অন্ধকার মুহূর্তে হালিমার গল্প কিছুটা হলেও অভিবাসী বিশেষকরে মুসলিমদের জন্য আশার আলো দেখিয়েছে।
‘টিন ভোগ’ এর এই ডিজিটাল সংস্করণে হালিমা বলেছেন, ‘এই দেশ আমাকে জীবনের শিক্ষা, কষ্ট এবং আশ্চর্যজনক সুযোগের অনেক কিছুই দিয়েছে। এখানে বেড়ে উঠার দিনগুলোতে, মুসলিম নারীকে নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিতে লেখা কোনো প্রবন্ধ কোনো পত্রিকায় আমি কখনো দেখিনি। আপনাকে খারাপের সঙ্গে ভালটাকেও গ্রহণ করা উচিৎ।’
ইউনিসেফের দূত হিসেবে কেনিয়ার কাকুমা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান তিনি। এই শিবিরেই তিনি এক সময় বেড়ে ওঠেছেন। সেখানে তিনি প্রথমবারের মতো তরণ-তরুণীদের সঙ্গে মিলিত হন এবং তাদের উদ্দেশ্য ঐতিহাসিক বক্তৃতা করেন তিনি। ম্যাগাজিনটির ডিজিটাল ভার্সনে এর সবই স্থান পেয়েছে।
মাত্র ৬ বছর বয়সে হালিমা আমেরিকা এসে মিনেসোটার সেন্ট ক্লাউডে থাকা শুরু করেন। সেন্ট ক্লাউড স্টেট ইউনিভার্সিটিতে তিনি পড়াশোনা করছেন।
ফ্যাশনের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনিই প্রথম মডেল, যিনি হিজাব পরে মঞ্চে র্যা্ম্প করেন। সাবেক এই শরণার্থী হিজাব এবং বুরকিনি পরেই সুপারমডেল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন। বিশ্বের বড় বড় ফ্যাশন শো-এ অন্যতম আকর্ষণ তিনি।
আর আগেও বিভিন্ন ম্যাগাজিন কাভার করা হয়েছে তাকে নিয়ে।

মিস মিনেসোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পর অ্যাডেন জাতীয় গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই সাথে হিজাব পরিধান করার জন্য প্রতিযোগিতায় প্রথম প্রতিযোগী হন। কিছু বিশ্লেষক এই মডেলিং শিল্পকে একটি নতুন শিল্প হিসেবে দেখছেন।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইয়াহী সিজন ৫ এর জন্য নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে আত্মপ্রকাশ করেন। পরে তিনি মিস ইউএসএ ২০১৭ সাংস্কৃতিক একটি প্রাথমিক ও টেলিভিশনের বিচারক হিসেবে কাজ করেন। পরে তিনি ম্যাক্সমারা এবং আলবার্টা ফেররেটি সহ অসংখ্য ডিজাইনারদের জন্য যান।
তিনি ২০১৬ সালে মিলান ফ্যাশন উইক এবং লন্ডন মডেস্ট ফ্যাশন উইকে অংশগ্রহণ করেছেন। একটি সিআর ফ্যাশান বইয়ের কভার করা হয়েছে তাকে নিয়ে।
