
গুগল, ফেসবুক, ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ থেকে দেয়া বিজ্ঞাপনের লেনদেন থেকে সব ধরনের রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এই আদেশ দেয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব,আইনজীবী মো. কাউছার, মাজেদুল কাদের, সাজ্জাদুল ইসলাম ও অপূর্ব কুমার বিশ্বাস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি মোতাহার হোসেন সাজু।
আদালতের আদেশে বলা হয়, সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ইয়াহু, ই-কমার্সের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম আমাজন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবসহ ইন্টারনেটভিত্তিক আন্তর্জাতিক সব প্লাটফর্ম থেকে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি, লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের লেনদেন থেকে উৎসে কর, শুল্কসহ সব ধরনের রাজস্ব আদায় করতে হবে।
একই সঙ্গে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি, লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের লেনদেনের বিপরীতে এসব প্লাটফর্ম থেকে আদায়যোগ্য উৎসে কর, শুল্কসহ সব ধরনের রাজস্ব আদায়ে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে অর্থ সচিব, আইন সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, বাংলদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, গুগল, ইয়াহু, আমাজন ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিবাদীদের আগামী ২৫ জুনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে বলে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব জানিয়েছেন।
গুগল-ফেইসবুক-ইউটিউবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ পথে যাচ্ছে বলে তা তদারকির মধ্যে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছিল।
এর মধ্যেই গত ৯ এপ্রিল বিষয়টি নিয়ে আদালতের নির্দেশনা চেয়ে মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লবসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন।
অ্যাডভোকেট পল্লব বলেন, প্রযুক্তির যুগে গুগল, ফেসবুক এখন প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন এসব প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেখতে আগ্রহী। দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও।
তিনি আরো বলেন, এ সুযোগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে এদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট বিশ্বের নামীদামি প্লাটফর্মগুলো। কিন্তু সরকার তার প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এখন এসব প্লাটফর্ম থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে।
অ্যাডভোকেট পল্লব বলেন, রুল জারি ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি গত ১০ বছরে অর্থাৎ ২০০৭ থেকে এখন পর্যন্ত এসব প্লাটফর্ম বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ আয় করেছে, তা নিরূপণ করতে এবং নিরূপিত আয়ের বিপরীতে কী পরিমাণ উৎসে কর, শুল্ক ও রাজস্ব আদায়যোগ্য ছিল, তা নিরূপণ করতে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।