আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলাকারীরা শিক্ষার্থী নয়, এরা সন্ত্রাসী। ফলে এই নারকীয় হামলার সঙ্গে জড়িতদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামানের বাসভবন হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তকর্তা ও ছাত্রলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার রাতে তিনি জানান, যারা রবিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে তাদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তারা মঙ্গলবার রাত থেকে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান করে স্লোগান দিচ্ছেন।
আন্দোলনকারীদের এই অংশটি বলছে, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বেলা ১১টার দিকে তারা অবস্থানে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
এরই মধ্যে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবন পরিদর্শনে গেলেন।
বিদ্যমান কোটার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে—সরকারে এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। সোমবার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা সংস্কারের ব্যাপারে সরকার অনড় অবস্থানে নেই। আমরা তাদের দাবির যৌক্তিকতা ইতিবাচকভাবে দেখি।’
এমন তাণ্ডব কখনো দেখিনি, হামলাকারীরা ছাত্র হতে পারে না: ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে সোমবার প্রথম প্রহরে (রাত ২টা) আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এতে ভিসি’র বাসভবনের কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।
সব কিছুই তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে নির্বাক হয়ে গেছেন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারীরা ছাত্র হতে পারে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, মুখোশধারী-বহিরাগত। আর কারা হামলা করেছে, তা আপনারা জানেন, দেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, অনেক আন্দোলন দেখেছি। কিন্তু এমন তাণ্ডব দেখিনি। হত্যার পরিকল্পনাই ছিল হয়তো। নইলে বেডরুমে ঘুমন্ত মানুষগুলোর ওপরে এভাবে হামলা হতে পারে না। ওরা কিছুই আর অবশিষ্ট রাখেনি। ঘরে পা রাখারও উপায় নেই।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার। আমরা এখানে কিই-বা করতে পারি। এই ঘটনার দুঃখ জানানোর ভাষা নেই।
এদিকে মধ্যরাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে টিএসসির ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে র্যা ব এবং পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।