
আফগানদের উত্থানটা নতুন কিছু নয়। তবে বাছাইপর্বের শুরুতে দেখা মিলেছিল হতাশায় ন্যুব্জ এক দলের। চার ম্যাচের তিনটায় হেরে চলে গিয়েছিল খাদের কিনারে। সমীকরণ এমন ছিল, নিজেরা শেষ ম্যাচ জিতলেও হয়তো বাদ পড়ে যেত। যদি হংকং হারিয়ে দিত নেপালকে। ভাগ্য ভালো, নেপাল হংকংকে জিততে দেয়নি।
নিজেদের শেষ ম্যাচটা জিতে রান রেটে এগিয়ে থেকে আফগানরা টিকিট পেয়েছিল সুপার সিক্সের।আর সেখানেই কী অবিশ্বাস্য আফগানিস্তান! নিজেদের তিন ম্যাচের প্রতিটা জিতে উঠে গিয়েছিল ফাইনালে। আর আজ ফাইনালে তো তারা হারাল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
রশিদ খানের ওয়ানডেতে দ্রুততম ১০০ উইকেট পাওয়ার বিশ্ব রেকর্ডের দিনে গেইলরা অলআউট হয়ে গিয়েছিল ২০৪ রানে। বল হাতে নায়ক অবশ্য রশিদ নন। এমনকি এভিন লুইস আর মারলন স্যামুয়েলসের মহামূল্যবান দুটি উইকেট নেওয়া গুলবাদিন নাইবও নন। নায়ক ৪ উইকেট নেওয়া মুজিব উর রহমান।
গেইল-নিম্নচাপকে ঝড়ে রূপান্তর হওয়ার আগেই (১০ রান) ফিরিয়েছেন। ফিরিয়েছেন সাতে নেমে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৪ রান করা রভম্যান পাওয়েলকেও। এরপর নিজের শেষ ও ইনিংসের ৪৭তম ওভারে টানা দুই বলে শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে অলআউট করেছেন। বেচারা হ্যাটট্রিকের সুযোগটাই পেলেন না!
আফগান ব্যাটসম্যানরা অবশ্য সুযোগ পেলেন ফাইনালটা স্মরণীয় করে রাখার। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা মোহাম্মদ শেহজাদ ৯৩ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে সুযোগটা লুফে নিলেন। ১ উইকেটে ১৪৮ তুলে ফেলা আফগানরা শেহজাদকে হারালেও আর পথ হারাল না। রহমত শাহর ৫১ রাখল বড় ভূমিকা। গেইলের তিন বলে টানা তিন ছক্কা মেরে ৪১তম ওভারে খেল খতম করে দিলেন মোহাম্মদ নবী।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চার ম্যাচে এটি আফগানিস্তানের তৃতীয় জয়! এর মধ্যে দ্বিতীয় জয়টা বাছাইপর্বের সুপার সিক্সেই। কোনো বোনাস পয়েন্ট নিয়ে সেরা ছয়ে আসেনি। এখানে তিন ম্যাচের একটাতে হারলেই বিদায় হয়ে যেত আফগানদের। এমন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েই তাদের সুপার সিক্স শুরু।
পরে হারিয়েছে আরব আমিরাতকে। আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে নিশ্চিত হয় তাদের ২০১৯ বিশ্বকাপ। কিন্তু তাতেও ক্ষুধা তো মেটেনি। এবার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও হারিয়ে দিল তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল আগেই।