
জাতির হৃদয় নিঃড়়ানো ভালোবাসা ও পরম মমতায় ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানালো গাইবান্ধাবাসী। একুশের প্রথম প্রহরে বাংলা বর্ণমালার সৈনিকদের অবদান ও সংগ্রামের দিনগুলিকে স্মরণ করলো গাইবান্ধাসহ সারাদেশ ও বিশ্বের মানুষ । সর্বস্তরের মানুষের পদভারে জেগে উঠে গাইবান্ধা পৌরপার্কের স্মৃতির শহীদ মিনার। রক্ত দিয়ে যে মিনার গড়েছেন ভাষা শহীদ-সংগ্রামীরা, ভালোবাসার অর্ঘ্যে তা ভরিয়ে তুললেন মানুষ।
গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাত ১২টা এক মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে গাইবান্ধা পৌর শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি। এরপর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল। তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে নিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে শহীদ মিনারের বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, ছাত্রসহ সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষ। মিনার প্রাঙ্গণে শূন্যপদে ভিড় করেন তারা।
হুইপ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের শ্রদ্ধা নিবেদনশেষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র এ্যাড. শাহ্ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন, জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে সরদার মো. শাহীদ হাসান লোটন ও শাহ আহসান হাবিব রাজিব, জাতীয় পার্টি, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ব্যারিস্টার মাসুদ আখতার পলাশ, পৌরসভা সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন গাইবান্ধা জেলা শাখা, জেলা আনসার-ভিডিপি, জেলা আওয়ামী মহিলা লীগসহ আরও অনেকে।
রাত ১টার দিকে জেলা বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মঈনুল হাসান সাদিকের নেতৃত্বে জেলা বিএনপি শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিএনপি নেতা শহীদুজ্জামান শহীদ,মোশাররফ হোসেন বাবুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জেলা আওয়ামী লীগ, শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ মার্কসবাদী, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
রাত ১২টায় শহীদ মিনারে মানুষের যে ঢল নামে তা অবিরতভাবে চলে সকাল পর্যন্ত। হাজারো মানুষের শূন্যপদের আগমনে-স্রোতে জেগেছিল স্মৃতির মিনার। দিনভর মানুষের স্রোত শহরের সবগুলো সড়কের মোহনায় পরিনত হয়েছিল পৌরপার্কের শহীদ মিনার।