
তিন বারের জাতীয় চলচ্চিত্র প্ররস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জয়া আহসান দেশের বাইরে বিদেশে একের পর এক সাফল্য মুঠোবন্দি করে চলেছেন। সে তালিকায় এবার যুক্ত হল ভারতের জনপ্রিয় অ্যাওয়ার্ড ফিল্মফেয়ার।
এ বছরের জিও ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস(ইস্ট)-এ ‘বিসর্জন’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয় ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন এ অভিনেত্রী। শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতা সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে জয়ার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন পরিচালক সুজয় ঘোষ।
একই আয়োজনে সমালোচক ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন ইশা শাহ, তার ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। জয়া আহসান এই ক্যাটাগরিতেও মনোনীত হয়েছিলেন।
‘ময়ুরাক্ষী’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার (সমালোচক ক্যাটাগরি) পুরস্কার পেয়েছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে ওই একই ছবিতে অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয় ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। প্রসেনজিতের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পরিচালক সুজয় ঘোষ। ‘সেরা ছবি’র পুরস্কার পেয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘বিসর্জন’।
ছবিটিতে জয়া আহসানের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন আবীর চ্যাটার্জি, কৌশিক গাঙ্গুলীসহ অন্যরা। এবারের জিও ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড (পূর্ব)-এ ‘বিসর্জন’ ছবিটি ১৪টি মনোনয়ন পায়। এরমধ্যে ৬টি বিভাগে পুরস্কার জিতেছে। এগুলোর মধ্যে সেরা সহ-অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন কৌশিক গাঙ্গুলী।
এই ছবিতে ‘সেরা কাহিনী’র পুরস্কারও পেয়েছেন কৌশিক গাঙ্গুলী। ‘বিসর্জন’ ছবিতে সেরা শব্দগ্রাহকের পুরস্কার পেয়েছেন অনির্বান সেনগুপ্ত। ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট’ পুরস্কার পেয়েছেন অভিনেত্রী সাবিত্রি চ্যাটার্জি ও মৃণাল সেন। পরিচালক হিসেবে সেরা আত্মপ্রকাশ (বেস্ট ডেব্যু) ‘সহজ পাঠের গপ্পো’ ছবির জন্য ‘সেরা পরিচালক’-এর পুরস্কার পেয়েছেন পরিচালক মানস কুমার পাল। অভিনেত্রী হিসেবে সেরা আত্মপ্রকাশ(বেস্ট ডেব্যু) পুরস্কার পেয়েছেন রুক্সিণী মৈত্র। ‘ককপিট’ ও ‘চ্যাম্প’ ছবির জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। অভিনেতা হিসেবে সেরা আত্মপ্রকাশ(বেস্ট ডেব্যু) পুরস্কার পেয়েছে দুই কিশোর অভিনেতা নুর ইসলাম ও সামিউর আলম।
‘সহজ পাঠের গপ্পো’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তারা এই পুরস্কার অর্জন করে। ‘ময়ুরাক্ষী’ ছবির আবহসংগীতের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। ওই বিভাগেই অন্যদের সঙ্গে মনোনীত হয়েছিলেন চিরকুট ব্যান্ডের পাভেল আরীন।‘পোস্ত’ ছবিতে ‘কেন এরকম কিছু হল না’ গানটির জন্য বেস্ট প্লে ব্যাক সিঙ্গার (মেল) পুরস্কার পেয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী।
অন্যদিকে ‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এ ‘তোমাকে বুঝিনা প্রিয়’ গানটির জন্য বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (ফিমেল)-এর পুরস্কার পেয়েছেন চন্দ্রানি ব্যানার্জি। এই বিভাগে অন্যদের সঙ্গে মনোনীত হয়েছিলেন চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ডুব’ ছবির ‘আহারে জীবন’ গানটির জন্য)। ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে সংগীতের জন্য সেরা মিউজিক অ্যালবাম পুরস্কার পেয়েছেন অনিন্দ চ্যাটার্জি, অনুপম রায়, শান্তনু মৈত্র ও প্রসেনজিৎ মুখার্জি।
‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এ বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি’-এর পুরস্কার পেয়েছেন সুপ্রিয় দত্ত। এই বিভাগে অন্যদের সঙ্গে মনোনীত হয়েছিলেন বাংলাদেশের শেখ রাজিবুল ইসলামও। ‘সহজ পাঠের গপ্পো’ ছবিতে বেস্ট এডিটিং’-এর পুরস্কার পেয়েছেন সুজয় দত্ত রায় ও অনির্বান মাইতি। ‘মাছের ঝোল’ ছবিতে ‘সেরা সংলাপ’-এর পুরস্কার পেয়েছেন প্রতীম ডি. গুপ্তা। এবারের ‘জিও ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস (পূর্ব) ২০১৮’-এ ২৫টি ক্যাটাগরিতে প্রায় শতাধিক ছবি মনোনীত হয়।
জনপ্রিয় ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ছিল ১০টি, এছাড়াও সমালোচক, প্রযুক্তিসহ অন্য বিভাগগুলিও ছিল। পুরো অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন অভিনেতা আবীর চ্যাটার্জি ও পরমবব্রত চট্টোপাধ্যায়। পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি এ আয়োজনে বিভিন্ন শিল্পীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও ছিল।